কলকাতা: এর আগেও এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। নির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Hari Krishna Dwivedi)। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের (Student Credit Card)- আবেদন কেন বাতিল করে দিচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি তা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন নবান্ন (Nabanna)। আর এ দিন ভার্চুয়াল বৈঠকে তাই ফের এ নিয়ে জেলাগুলির কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করলেন মুখ্যসচিব। সূত্রের খবর, যত তাড়াতাড়ি সম্ভ ব এ নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার সমস্ত জেলা শাসকদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যসচিব এইচকে দ্বিবেদী। সেই বৈঠকে আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। অভিযোগ উঠেছে, যাবতীয় পদ্ধতি মেনে আবেদন করেও ব্যাঙ্কগুলি থেকে লোন পাচ্ছেন না পড়ুয়ারা। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বাতিল করা হচ্ছে তাঁদের আবেদন। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্ন। ঠিক কী কারণে ব্যাঙ্কগুলি স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে, তার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য প্রত্যেকটি জেলায় এডিএম-দের নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি গড়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যসচিব। এদিন ভার্চুয়াল বৈঠকে জেলা শাসকদের এমনই নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট কমিটি-ই খতিয়ে দেখবে ব্যাঙ্কগুলি কোন কারণ দর্শিয়ে বা কী কারণে বাতিল করে দিচ্ছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের আবেদনপত্র।
তাছাড়া, আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যেই যাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বেশি সংখ্যক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের অনুমোদন দেওয়া যায় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুতে বলা হয়েছে ব্যাঙ্কগুলিকে। এদিন মুখ্যসচিব বিভিন্ন জেলা ও ব্যাঙ্কের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে। সেই বৈঠকেই এমনটাই নির্দেশ দেন বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, যাঁরা টানা ১০ বছর এই রাজ্যে রয়েছেন তাঁরা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪০ বছর পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা এই ঋণ নিতে পারবেন। চাকরি পাওয়ার পর-ও ১৫ বছরে অত্যন্ত কম সুদে সেই টাকা পরিশোধ করার সুযোগ থাকছে পড়ুয়াদের কাছে। দশম শ্রেণি থেকেই ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের সুবিধা মেলার কথা।
রাজ্যে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়ুয়াদের সামনে নয়া দিগন্তের উন্মোচন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের আওতায় ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন পড়ুয়ারা। তার অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়াও অনেকদিন হল শুরু হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় থেকে খুব কম সংখ্যক পড়ুয়াই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লোনের সুবিধা পাচ্ছেন। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে লোন অনুমোদনের চেয়ে বাতিলের সংখ্যাই যেন বেশি। অন্তত তেমনটাই পরিসংখ্যান ধরা পড়ছে নবান্ন সূত্রে। আর এই তথ্য পেয়েই উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার। তাই তড়িঘড়ি এ নিয়ে রিপোর্ট চাইল নবান্ন।
এর আগে বেসরকারি হাসপাতালগুলি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফিরিয়ে দেওয়ার প্রচুর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করেছে নবান্ন। চালু হয়েছে টোল ফ্রি নম্বর ও মোবাইল নম্বর। যেখানে কোনও হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণে অসম্মত হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবেন রোগী বা রোগী পরিবার।