কলকাতা: যাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে মধুচক্র চালানোর অভিযোগ, যাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে বেআইনিভাবে হোটেল চালানোর অভিযোগ, সেই বিতর্কিত বিজেপি নেতা আজ বনগাঁয় নবগঠিত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে চলেছেন ! ক্ষোভ দলের অন্দরেই। কল্যাণীর বিতর্কিত বিজেপি নেতা কল্যাণ সরকারের (Kalyan Sarkar) রাজনৈতিক কেরিয়ারের স্বচ্ছতা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
কল্যাণ সরকার, কল্যাণীর এক বিতর্কিত চরিত্র, বর্তমানে যিনি বিজেপির এক দাপুটে নেতা। রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেন সিপিএম থেকে, পরে পিডিএস করেন। ২০১৯ সালের ২৭ মে যোগ দেন বিজেপিতে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ। পুলিসের খাতাতেও নাম রয়েছে তাঁর।
পুলিস সূত্রে জানা যায়, গোপাল সেন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পার্টনারশিপে একটি হোটেল চালাতেন কল্যাণ। কল্যাণীর বি ব্লকের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা যাদব হালদারের বাড়িতে ছিল সেই হোটেল। অভিযোগ, দিনের পর দিন ওই হোটেলের ঘরে দেহব্যবসা চালাতেন কল্যাণ। প্রথমে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। প্রত্যেকদিন অচেনা ছেলেমেয়েদের যাতায়াত দেখে সেই সন্দেহ গাঢ় হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর নিলীমেশ রায়চৌধুরীর কাছে সেসময় অভিযোগও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
এরপর হাটে হাঁড়ি ভাঙে। কাউন্সিলর নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পুলিস দিয়ে ওই হোটেলে তল্লাশি চালান। অনেক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। বিতর্ক ছড়ায়। এমনও অভিযোগ, টাকা দিয়ে সেই বিতর্ক ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন কল্যাণ। তার রেশ কাটার আগেই আরও মারাত্মক অভিযোগ ওঠে কল্যাণের বিরুদ্ধে। সাংসদের নাম করে কল্যাণ বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
তাঁর বিজেপিতে যোগদান ও সক্রিয় হয়ে ওঠা আজ দলেরই অনেকে মেনে নিতে পারছেন না বলে খবর। বিজেপি সূত্রে খবর, কল্যাণ সরকার এখন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সখ্যতা বাড়িতে বনগাঁয় বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদ পেতে চলেছেন কল্যাণ। তাঁকে ঘিরে দলের পুরনো নেতা, কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। দলেরই একাংশের অভিমত, এই ধরনের বিতর্কিত ব্যক্তিকে দলে যোগ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হলে এলাকার সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে দলের অভিপ্রায় নিয়েই ভুল বার্তা পৌঁছবে।
আরও পড়ুন: দুয়ারে কে আগে বিনে পয়সায় পৌঁছে দেবে ভ্যাকসিন? এ নিয়ে তরজা কেন্দ্র-রাজ্যের
যদিও এবিষয়ে কল্যাণ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলে, “আমি এখনই এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। বিশেষ কাজে আছি। দুদিন পরে কথা বলব”। রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “অভিযোগ সত্য হলে দল নিশ্চয়ই পদ নিয়ে বিবেচনা করবে। এরকম নেতৃত্বকে দল পদ দেবে বলে আমার মনে হয় না।”
এপ্রসঙ্গে দলের রাজ্য সভার সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু কোনও মন্তব্যই করতে চাননি। উল্টে বলে দেন, “আপনারা জেলার নেতাদের সঙ্গে কথা বলুন। এটা জেলার বিষয়।”