Nagerbazar: ‘তখন সবে অঞ্জলি শেষ হয়েছে, হঠাৎ দেখি মণ্ডপের পিছনেই আমার বরের সঙ্গে ওই ভদ্রলোক…’, আইনজীবীর সঙ্গে ঘৃণ্য আচরণ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের, নাগেরবাজারের ঘটনায় স্তম্ভিত পুলিশও
Nagerbazar: সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে গোটা ছবি! আর সে ছবি যতটা হাড়হিম করার মতো, তার থেকেও বেশি চাঞ্চল্যের যিনি অস্ত্রের কোপ মেরেছেন, তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আর যাঁর গলায় তিনি অস্ত্রের কোপ মেরেছেন বলে অভিযোগ, তিনি পেশায় একজন আইনজীবী।

কলকাতা: পিছনে পার্ক করা একটা গাড়ি। একটা আবাসন চত্বর। সেখানে বেশ কয়েকজনের জটলা। তাঁদের মধ্যে কিছু একটা বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি চলছে। দৃশ্যত তা স্পষ্ট। হঠাৎই করেই হলুদ রঙা পাঞ্জাবি পরিহিত এক ব্যক্তি উঠে এলেন। তারপর এক জনের সঙ্গে প্রথমে কথা কাটাকাটি, তারপরই কিল-চড়-ঘুষি। তারমধ্যেই হঠাৎ করে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ! সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে গোটা ছবি! আর সে ছবি যতটা হাড়হিম করার মতো, তার থেকেও বেশি চাঞ্চল্যের যিনি অস্ত্রের কোপ মেরেছেন, তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আর যাঁর গলায় তিনি অস্ত্রের কোপ মেরেছেন বলে অভিযোগ, তিনি পেশায় একজন আইনজীবী। শহর কলকাতার বুকে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের কথা আখছার উঠে আসছে খবরে, কিন্তু তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের মধ্যে এহেন আচরণ, তা সত্যিই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে একাধিক। একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কোথা থেকে অস্ত্র পেলেন? নাগেরবাজারের হনুমান মন্দির সংলগ্ন অম্বিকা কমপ্লেক্সের এই ঘটনা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, গাড়ি সরানোতে আপত্তি, তার জেরেই বাগ বিতণ্ডা। আর সে কারণেই অস্ত্রের কোপ। আসলে ওই আবাসন চত্বরেই একটি সরস্বতী পুজো হচ্ছিল। মণ্ডপের সামনে একটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তা সরানো নিয়েই ঝামেলা। আক্রান্ত দেবসুন্দর দড়িফা বিজেপির ল সেলের সদস্য। তাঁর ওপরেই ধারাল কোনও বস্তু নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁর থুতনি থেকে গাল পর্যন্ত গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে।
আক্রান্ত আইনজীবী বলেন, “একটা গাড়ি ঠিক ওই জায়গাতে বহুদিন ধরেই পার্কিং করা থাকে। আমরা বহুবার বলেছি, কালকেও পুজো চলাকালীন বলা হয়েছে। উনি হঠাৎ করে এসেই ঝামেলা করে গালাগালি দিয়ে বাড়ি চলে গেলেন। ফিরে যখন আসেন, তখন বলি গালাগালি দিলেন কেন? তখনই হাতাহাতি, হঠ্ করেই ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালালেন। এর মধ্যে কোনও রাজনৈতিক বিষয় নেই।”
আক্রান্তের স্ত্রী বলেন, “আমরা সবে পুষ্পাঞ্জলি শেষ করেছি। আমরা পুজোর কাজেই ব্যস্ত ছিলাম। আর ছেলেরা সব এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। হঠাৎ দেখি, আমার বরের সঙ্গে ওই ভদ্রলোকের কিছু একটা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। প্রথমে বিশেষ পাত্তা দিইনি। তারপর বেশি বাড়াবাড়ি হতে আমি দৌড়ে ওদিকে যাই। ততক্ষণে কিছু একটা দিয়ে হামলা চালিয়ে দিয়েছে। আমার বসের মুখ-দাঁত সব রক্তে ভেসে যাচ্ছিল।”
বিজেপি মুখপাত্র বিমলশঙ্কর নন্দ বলেন, ” গাড়ি রাখা নিয়ে ঝামেলা। তাতে একজন আইনজীবীকে একজন শিক্ষক, নিজেকে একজন বিপ্লবী বলে দাবি করেন, চুয়াত্তর-পঁচাত্তর বছরের লোক, অস্ত্র চালিয়ে দিচ্ছে, তা ভাবাই যায় না।”
ইতিমধ্যেই আইনজীবীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে নাগেরবাজার থানার পুলিশ। প্রশ্ন হচ্ছে শিক্ষকের কাছে কীভাবে অস্ত্র এল? পুলিশ মনে করছে, ঘর থেকে ধারাল কোনও বস্তু নিয়েই হামলা চালিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।





