কলকাতা: ধর্মতলায় গ্রেফতার আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি (Naushad Siddiqui)। ভোট পরবর্তী হিংসার প্রতিবাদ ও দিল্লিতে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে শনিবার ধর্মতলায় প্রতীকি অবস্থান করে আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (ISF)। যার পুরোভাগে ছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ। সেখান থেকেই তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। প্রসঙ্গত, এদিন আইএসএফ একাই এই প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হয়। ছিল না জোটসঙ্গী বাম-কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি জোটের আগল আলগা হচ্ছে? এবার কি একলা চলার পথে আব্বাস সিদ্দিকির দল?
আইএসএফের তরফে এদিন গান্ধীমূর্তির পাদদেশে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। কেন্দ্রের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় যেমন এই অবস্থান। একইসঙ্গে রাজ্যে ভ্যাকসিন দুর্নীতি, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়েও সরব হন নওশাদরা। কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে জমায়েত করেন আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা। সেই সময়ই জমায়েত ভঙ্গ করে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও এ ক্ষেত্রে আইএসএফ নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছে, বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া কি একজন বিধায়ককে গ্রেফতার করা যায়?
পুলিশের বক্তব্য, এই জমায়েতের কোনও অনুমতি ছিল না। করোনাকালে এ ধরনের জমায়েত কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। উল্টোদিকে আইএসএফের দাবি, সবরকম অনুমতি নিয়েই জমায়েত করেছে তারা। এসবের মাঝেই ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি-সহ দলের জনা পনেরো কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তবে বাম-কংগ্রেসকে দূরে রেখে হঠাৎই আইএসএফের এই একক কর্মসূচি নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও আব্বাস অনুগামীদের দাবি, প্রত্যেকটা দলই নিজেদের মতো করে কর্মসূচি নিতে পারে। এর সঙ্গে সংযুক্ত মোর্চার কোনও সম্পর্ক নেই। সেই মোর্চায় কোনও ফাটলও ধরেনি বলেই দাবি করেন তাঁরা। আগামিদিনে মোর্চার সমস্ত সদস্য একসঙ্গে পথে নামবে বলেও শুনিয়েছেন নওশাদরা।
আরও পড়ুন: ভুয়ো টিকাকরণকাণ্ডের তদন্ত করুক কেন্দ্রীয় সংস্থা, দিল্লিতে চিঠি লিখলেন শুভেন্দু
যদিও এ বক্তব্য এতটাই সহজ-সরল বলে মনে করছে না রাজনৈতিক মহল। বৃহস্পতিবার থেকেই ময়দানে নেমেছে বামেরা। সেখানে কোথাও আইএসএফ বা কংগ্রেসের উপস্থিতি দেখা যায়নি। এর আগে গত শনিবার অধীর চৌধুরী সাংবাদিক বৈঠক করে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, জোট হয়েছে নির্বাচনকেন্দ্রিক। ফলে ভোটের পর তার অস্তিত্ব আছে কি নেই, তা নিয়ে কিন্তু কংগ্রেসের অবস্থান পরিষ্কার নয়। অন্যদিকে সম্প্রতি সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক থেকেও স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছিল, এই জোট তারা রাখছে। তবে কেউ যদি তা ভেঙে বেরিয়ে যায় তাতে সিপিএমের কোনও বক্তব্য নেই। যদিও আইএসএফ নেতৃত্ব বলছে, প্রত্যেকে তার নিজের মতো করে কর্মসূচি নিতে পারে। তবে আইএসএফ এখনও সংযুক্ত মোর্চারই অঙ্গ।