Newtown Murder: ৬ মাস আগে কলকাতায় আসা, দামী মোবাইল-গ্যাজেটেই সাজিদ হয়ে উঠেছিলেন বন্ধুদের ইর্ষার কারণ

Newtown Murder: যেখানে একটি স্টিল ছবিতে সাজিদের মাথা ও মুখ সেলোটেপ বাঁধা অবস্থায় দেখা যায়। ঠিক ৩ মিনিটের মাথায় সেই ছবি ডিলিট করে দেওয়া হয়। এরপর হোয়াটসঅ্যাপ কলে বাবাকে ফোন করে জানানো হয় সাজিদকে অপহরণ করা হয়েছে।

Newtown Murder: ৬ মাস আগে কলকাতায় আসা, দামী মোবাইল-গ্যাজেটেই সাজিদ হয়ে উঠেছিলেন বন্ধুদের ইর্ষার কারণ
মৃত ছাত্রImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Oct 06, 2023 | 12:12 PM

কলকাতা: ডাক্তারির পড়াশোনার প্রস্তুতি নিতে কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু সুটকেস থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর নিথর দেহ। নিউটাউনের তারুলিয়ায় ১৯ বছরের সাজিদ হোসেনের খুনের ঘটনায় উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মালদার কালিয়াচক থানার ষোলো মাইল এলাকার বাসিন্দা সাজিদ। বাবা মোক্তার হোসেন স্কুল শিক্ষক। মেধাবী ছাত্র সাজিদ নিট পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নিউটাউনের একটি বেসরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছিল। ৬ মাস আগে কলকাতায় এসে মহিষ বাথান এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে সে একাই থাকত।

তদন্তকারীরা প্রাথমিক জেরায় জানতে পেরেছেন, এই ফ্ল্যাটের এলাকায় গৌতম সিংয়ের খাবারের দোকান। সেখান থেকেই আলাপ ও পরে বন্ধুত্ব হয় সাজিদের সঙ্গে। সাজিদের হাইফাই লাইফ স্টাইল, আই ফোন, সঙ্গে থাকা বহুমূল্য গ্যাজেট এবং তাঁর মোবাইলে পেমেন্ট অ্যাপে বাড়ি থেকে পাঠানো প্রচুর অঙ্কের টাকা গৌতম ও তাঁর বন্ধুদের কাছে ঈর্ষার কারণ হয়ে ওঠে। সফট টার্গেট করে তুলেছিল বলেই প্রথমিক অনুমান পুলিশের।

গৌতম মাঝেমধ্যে সাজিদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করতো তাঁর পরিবারের কে কী করে , কত সম্পত্তি আছে। ৪ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকেই ছেলে সাজিদ হোসেনকে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। রাতে সাজিদের বাবা মোক্তার হোসেনের ফোনে সাজিদের মোবাইল থেকেই একটি ছবি পাঠানো হয়।

যেখানে একটি স্টিল ছবিতে সাজিদের মাথা ও মুখ সেলোটেপ বাঁধা অবস্থায় দেখা যায়। ঠিক ৩ মিনিটের মাথায় সেই ছবি ডিলিট করে দেওয়া হয়। এরপর হোয়াটসঅ্যাপ কলে বাবাকে ফোন করে জানানো হয় সাজিদকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় ফোনেই সাজিদের প্রাণনাশের হুমকি দেয় ফোনের ওপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি।

সঙ্গে সঙ্গে নিউ টাউন থানায় ফোন করে সাজিদের বাবা গোটা বিষয়টি জানান। পরবর্তীতে থানায় এসে লিখিতভাবে মিসিং ডায়েরি করেন। নিউটাউন থানার পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালায়। সেই সময় মহিষ বাথান এলাকার একটি খবরের দোকানের মালিক নিউ টাউনের তারুলিয়া এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকা গৌতম সিংয়ের সঙ্গে পুলিশের কথা হয়।

গৌতম পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য সাজিদের সম্ভাব্য কয়েকটি লোকেশন দেয়। যার সবই ছিল ভুল তথ্য। পুলিশ সেগুলির খোঁজ করতে শুরু করে। কিন্তু তাতে যে শেষ রক্ষা হবে না, তা ভালই আঁচ করতে শুরু করেছিল গৌতম। তখনই সাজিদের দেহ দুমড়ে মুচড়ে একটি বড় স্যুটকেসে ঢুকিয়ে তা খাটের তলায় লুকিয়ে রাখে। সেখান থেকেই আজ ভোর রাতে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধারের ক্ষেত্রে সাজিদের সুইচ অফ থাকা আই ফোনের লাস্ট টাওয়ার লোকেশন কাজে লেগেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এরপর গৌতম সিং ও তার ৩ বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিউ টাউন থানার পুলিশ। এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত গৌতম ও পাপ্পু ঘোষ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।