কলকাতা : করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের ধর্ম ঠিক কেমন, তা এখনও গবেষণাধীন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি হলেও এর প্রভাবে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। কলকাতায় এখনও পর্যন্ত যে ১৬ জন ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠলেন তিনজন। তবে কলকাতা তথা বাংলায় নতুন করে করোনার বাড়বাড়ন্তে যে ওমিক্রনই দায়ী, সে কথা কার্যত মেনে নিচ্ছে স্বাস্থ্য ভবন।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী শুক্রবার জানিয়েছেন, সুস্থ হয়ে ওঠায় তিন ওমিক্রন আক্রান্তকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত বাকি জিনোম সিকোয়েন্সিং- এর রিপোর্ট আসেনি। এখনও পর্যন্ত কলকাতায় মোট ১৬ জনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে যাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্ত। তবে গত কয়েকদিনে যে ভাবে বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তার জন্য ওমিক্রনই দায়ী বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।
বুধবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার পার করেছিল। বৃহস্পতিবার ২ হাজার পার করে সেই সংখ্যা। আর শুক্রবার ফের লাফ! ফের আরও এক হাজার পার। স্বাস্থ্য দফতরের শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার পার করেছে। মৃত সাত। বেড়েছে পজিটিভি রেটও।
২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৫১। এর মধ্যে কলকাতাতেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৫৪ জন। মৃত্যু হয়েছে চারজনের। বাকি জেলাগুলি থেকে দৈনিক সংক্রমণে এই মুহূর্তে অনেকটাই এগিয়ে কলকাতা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ হাজার ৮১৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। পজিটিভিটি রেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৪৬ শতাংশে। শুধু কলকাতায় পজিটিভিটি রেট ২০-র বেশি।
স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উল্লেখ্য, কত নমুনা পাঠানো হচ্ছে আর কত নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভ হয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার দেখা গিয়েছে, ৬টি নমুনা পাঠানোর পর ৫ টি পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তা থেকে কলকাতায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত স্পষ্ট বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ধীরে ধীরে সরিয়ে ওমিক্রন তার থাবা বসাচ্ছে। কলকাতায় টেস্ট ও পজিটিভিটি রেটও সমান হারে বাড়ছে।
শুক্রবার বৈঠকে বসে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন তৈরির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে কলকাতা পুরনিগমে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, যদি একটি ফ্ল্যাটে ৫ জন করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে ওই আবাসনকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ওই আবাসনের লিফট স্যানিটাইজ করতে হবে। আবাসনের সুইমিং পুল, জিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত এরকম ১১ টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন : Omicron Variant in India: ‘তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম… আরও ঢেউ আসবে, আমরা ভাগ্যবান যে ওমিক্রণ ততটা ভয়ঙ্কর নয়’