কলকাতা: ‘আমি আপনাদের সামনে এখন শিশু রাজ্যপাল হিসাবে রয়েছি’, দায়িত্ব নেওয়ার ঠিক এক বছরের মাথায় এ কথা শোনা গেল সিভি আনন্দ বোসের (CV Ananda Bose) মুখে। বাংলার রাজ্যপাল (Governor) হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এক বছর পূর্ণ করে ফেললেন সিভি আনন্দ বোস। ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। তারপর কেটে গিয়েছে এক বছর। সেই উপলক্ষে ভিক্টোরিয়াতে হয়ে গেল জমকালো অনুষ্ঠান। সেখানেই এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিংহভাগ সময়েই বাংলায় বর্ক্তৃতা দিতে দেখা গেল তাঁকে। ভাঙা ভাঙা বাংলাতেই বললেন, “আমার স্নেহের ভাই-বোনেরা আমি আপনাদের সামনে এখন শিশু রাজ্যপাল হিসাবে রয়েছি। ১ বছর কেউ পূর্ণ করলে তাঁকে তো শিশুই বলা হয়। শিশুরা সব সময় মায়ের কাছে সুরক্ষিত থাকে। আমি তেমন বাংলা মায়ের কাছে সুরক্ষিত রয়েছি। বাচ্চা দুষ্টুমি করলে মা কখনও তার কান মুলে দেন। বাংলা মা তেমন করে আমার হাত ধরেছেন যাতে আমি পড়ে না যাই।”
প্রসঙ্গত, বাংলার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বারবারই বাংলার প্রতি, বাংলার মানুষের প্রতি, বাঙালির ভাবাবেগের প্রতি যে তাঁর বিশেষ ভালবাসা রয়েছে তা বুঝিয়েছেন বোস। কখনও সরস্বতী পুজোয় হাতেখড়ি দিয়েছেন, কখনও আবার বাংলায় বইও লেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আদ্যপ্রান্ত হয়ে উঠতে চেয়েছেন একজন বাঙালিবাবু। সম্প্রতি বঙ্গবাসীকে শারদীয়ার শুভেচ্ছাবার্তাও পুরোপুরি বাংলাতেই জানাতে দেখা গিয়েছে বোসকে। বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানেও যে আলাদা করে জায়গা পেতে চলেছে তাঁর ওই বাঙালি আবেগ, সে কথা আগেই শোনা গিয়েছিল।
এদিন রাজ্যপালের ভাষণে বারবার শোনা যায় বাংলার কিছু প্রচলিত লোককথার কথা। সেই গল্পগুলিও নিজেই একেবারে বাংলাতে বলেন বোস। সেই গল্পের আধারেই কীভাবে বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে তাঁর জীবন অতিবাহিত হচ্ছে, কীভাবে তিনি রোজ শিখছেন, জানছেন, কাজ করার চেষ্টা করেন এদিন তাই আবেগমিশ্রিত কণ্ঠে ভিক্টোরিয়া থেকে তুলে ধরেন বোস। বলেন, “বাংলা মা আমাকে শেখাচ্ছে কীভাবে উড়তে হয়। নমঃ বঙ্গ মাতা। বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফুল ও ফল পুণ্য হোক পুণ্য হোক পুণ্য হোক হে ভগবান। বাংলার মায়ের কাছে আমি নিজেকে সমর্পণ করছি। অনুগ্রহ করে আমাকে এ বাংলার সন্তানরূপে গ্রহণ করুন।”