
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির জেরে রাজ্যের স্কুলশিক্ষার অবস্থা বেহাল। হাজার হাজার শূন্যপদ স্কুলগুলিতে। স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ক্রমশ কমছে। সেই বেহাল অবস্থার কথা সামনে এসেছে বারবার। কিন্তু রাজ্যের উচ্চশিক্ষার অবস্থা যা, তা দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্য যথেষ্ট। রাজ্যের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন কমে অর্ধেক। ভিনরাজ্যে চলে যাচ্ছে বাংলার মেধা! কোথাও প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছে, বেরোয়নি ফল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনে এবার রেকর্ড পতন। প্রেসিডেন্সিতে পরীক্ষা হয়েছে অথচ ফল প্রকাশ হয়নি। অন্য কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু হয়ে গেলে, পড়ুয়ারা কি আর ফিরবে? উঠছে প্রশ্ন। ওদিকে, জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল প্রকাশ হয়নি। ফলে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তিও আটকে।
২০২৪-এ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির আবেদন জমা পড়েছিল ৫,৩৫টি। সেটা এবছর কমে হয়েছে ৩,৭৪২টি। অঙ্কে গত বছর ১৮৩৫টি আবেদন জমা পড়েছিল, এবার সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ৯৫৪। আর্টস বিভাগেও একই অবস্থা। গত বছর ভর্তির আবেদন জমা পড়েছিল ৬,৫১৫টি। এবার সেটা কমে হয়েছে ৫,২৩৮টি। বাংলায় মোট আবেদনের সংখ্যা ছিল ৪০৬টি। সেটাও এবার কমে অর্ধেক, ২৯০টি।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রাজেশ্বর সিনহা বলেন, “কেউ কেউ অন্য কলেজে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। সেখানে যদি তিন মাস ক্লাস হয়ে যায়, তারপর ভর্তি হলে সে আর ফিরবে না।” একই বক্তব্য, যাদবপুরের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক পার্থ প্রতিম রায়ের। তিনি বলেন, “সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে যাদবপুর। অন্য জায়গায় ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে সেশন শেষ করার চাপ বাড়বে। মানসিক চাপ বাড়বে। ইচ্ছা থাকলেও পড়ুয়ারা যাদবপুরে পড়বে না।”
এদিকে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য জটিলতা। প্রবেশিকা পরীক্ষার দায়িত্ব জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের হাতে। বোর্ড এখনও ফল প্রকাশ করতে পারেনি, ফলে ভর্তি প্রক্রিয়াও আটকে। এক পড়ুয়ার বক্তব্য়, ‘কেন নিজের দায়িত্বে পরীক্ষা নিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়?’
ওবিসি সংক্রান্ত জটিলতাতেও আটকে আছে ভর্তি? তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠনের নেতা প্রদীপ্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, কেউ কেউ শুধুমাত্র সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা করছেন। এদিকে, শিক্ষা দফতরের দবি, আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হলে আসন ফাঁকা থাকবে না। তবে আবেদনের নমুনাই বলে দিচ্ছে, সরকারি কলেজে উচ্চশিক্ষার অবস্থা খুব একটা ভাল নয়।