‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে মমতাকে নিশানা, সমালোচনায় মুখর বাম-তৃণমূল

তৃণমূলের পাশাপাশি বামেরাও বিজেপির মুণ্ডুপাত করছে। অধীর চৌধুরীও দাঁড়িয়েছেন মুুখ্যমন্ত্রীর পাশে। তবে গেরুয়া শিবিরের একরোখা মনোভাব অব্যাহত।

'জয় শ্রীরাম' স্লোগানে মমতাকে নিশানা, সমালোচনায় মুখর বাম-তৃণমূল
'জয় শ্রীরাম' স্লোগানে মমতাকে নিশানা, বিজেপিকে তুলোধনা বাম-তৃণমূলের
Follow Us:
| Updated on: Jan 23, 2021 | 8:56 PM

কলকাতা: পরিকল্পনা মাফিক ধুমধাম করে নেতাজীর ১২৫ তম (Netaji Birth Anniversary) জন্মজয়ন্তী পালন হল ঠিকই। তবে তাল কেটে গেল মাঝপথেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ভাষণ দিতে ওঠার আগের মুহূর্তেই বেনজিরভাবে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুরু হল দর্শকাসন থেকে। সেটা খোদ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সামনেই। সরকারি অনুষ্ঠানে এহেন আচরণ বরদাস্ত না করতে পেরে মেজাজ হারান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। দ্বর্থ্যহীন ভাষায় জানিয়ে দেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে তিনি ভাষণ দেবেন না।

ফলস্বরূপ গোটা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক অন্য মাত্রা নিয়েছে। সরকারি অনুষ্ঠানে এই ধরনের স্লোগান ওঠা কতটা শোভনীয় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে শাসকদল। তৃণমূলের (TMC) পাশাপাশি বামেরাও (CPIM) বিজেপির (BJP) মুণ্ডুপাত করছে। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে গেরুয়া শিবিরের এক রোখা মনোভাব অব্যাহত। একনজরে দেখে নেওয়া যাক কী বলল কোন শিবির।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়: অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। বাংলার মাথা হেঁট হয়ে গেল। বিজেপি কর্মীদের কার্ড দেওয়া হয়েছিল। আয়োজকদের যতটা সতর্ক থাকার দরকার ছিল তাঁরা ততটা ছিলেন না। এই ঘটনার নিন্দা জানানোর কোনও ভাষা নেই। সরকারি মঞ্চে এমনটা কাম্য নয়।

সৌগত রায়: আমরা লজ্জিত। নেতাজীর জন্মদিনের মতো পুণ্য দিনে এই ধরনের স্লোগান ব্যবহৃত হয়। এদের কাছে দেশপ্রমটা বড় ব্যাপার নয়। সাম্প্রদায়িক স্লোগানটাই বড়। রামের বন্দনা যে কেউ করতেই পারেন। কিন্তু, নেতাজীর সরকারি অনুষ্ঠান জয় শ্রী রাম ধ্বনি ওঠানোর জায়গা নয়। প্রধানমন্ত্রীর স্বয়ং বারণ করা উচিত ছিল এই ধরনের স্লোগান।

অধীর চৌধুরী: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াই থাকলেও তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি অনুষ্ঠানে তাঁকে অপমান করা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করছে কংগ্রেস।

বিমান বসু: শনিবার কলকাতায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী পালনের সরকারী অনুষ্ঠানে যে স্লোগান তোলা হয়েছে তা অনুচিত। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ দেওয়ার সময় এই অন্যায় কাজ করা হয়েছে। রাজ্যের পক্ষে মর্যাদাহানিকর কাজ হয়েছে। এই ঘটনা নিন্দনীয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও মনে রাখতে হবে সরকারী অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে পরিণত করা ঠিক নয়।

নুসরত জাহান: রামের নাম গলা টেপার জন্য নয়, আলিঙ্গনের জন্য ব্যবহার হওয়া উচিত। নেতাজীর জন্মজয়ন্তীর মতো সরকারি অনুষ্ঠানে এই ধরনের রাজনৈতিক স্লোগানের তীব্র নিন্দা করছি।

ডেরেক ওব্রায়েন: শালীনতা জিনিসটা লুম্পেনদের শেখানো যায় না। সম্মান কী সেটা ওরা জানে না।

মহম্মদ সেলিম: মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মতান্তর রয়েছে। কিন্তু, সরকারি মঞ্চকে বিজেপি-আরএসএস বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যবহার করছে। এটা নিন্দনীয়। রাজ্যের সরকারি মঞ্চকে ব্যবহার করা হয় দলীয় মঞ্চে। কে কার কাছ থেকে শিখেছেন জানি না। আজ থেকে নিশ্চয়ই মুখ্যমন্ত্রী আর তা করবেন না।

আরও পড়ুন: আমন্ত্রণ করে মঞ্চে ‘বেইজ্জত’! মোদীর সামনেই মাইক ছাড়লেন মমতা

সুজন চক্রবর্তী: এটা একটা অসভ্যতা। সরকারি মঞ্চে এই ধরনের অসভ্যতা। এটা করা যায় না। এটা পুরোপুরি অনুচিত একটা জিনিস। কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

কৈলাস বিজয়বর্গীয়: জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিয়ে স্বাগত করাকে মমতা অপমান বলে মনে করেন। এটা কী ধরনের রাজনীতি।

অমিত মালব্য: বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে না গিয়েও রবীন্দ্রনাথের সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করেছিলেন মমতা। নেতাজীর জন্মজয়ন্তীতে না ভাষণ না দিয়ে তিনিও আজকেও একই কাজ করলেন।

অর্জুন সিং: জয় শ্রী রাম শুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপমানিত বোধ করেন। আল্লা-হো-আকবর এবং ইনশা-আল্লা, খুদা হাফিজ বলা ওনার পছন্দ। আসলে প্রভু রামের অপমান করে উনি একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের ভোট পেতে চান।

আরও পড়ুন: পদ্মাসনে বসে প্রথম নমো দর্শন, ছুটে গিয়ে মোদীকে প্রণাম শুভেন্দুর