
কলকাতা: দুর্গা পূজার অনুদান নিয়ে বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। অনুদান নিয়ে আপত্তি না জানালেও আদালত আগেই প্রশ্ন তুলেছিল যে, ক্লাবগুলি অনুদানের খরচ নিয়ে হিসেব দিচ্ছে কি না। এবার হাইকোর্ট স্পষ্ট জানাল, হিসেব না দিলে অনুদান দেওয়া হবে না। গত কয়েক বছর ধরে দুর্গা পূজার জন্য ক্লাবগুলিকে অনুদান দিচ্ছে রাজ্য। গত বছর সেই অঙ্ক ছিল ক্লাবপ্রতি ৮৫,০০০, এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার। এছাড়া বিদ্যুতের বিলেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, যে সব ক্লাব গত বছরের অনুদানের কোনও হিসেব দেয়নি, তাদের অনুদান দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ হিসেব ছাড়া অনুদান দেওয়া যাবে না, এই বার্তাই দিল আদালত। এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে ক্লাবগুলিকে। আগামী এক মাসের মধ্যে যে ক্লাব হিসেব দিতে পারবে, তারাই অনুদান পাবে। ‘সরকারি টাকা এভাবে খরচ করা যায় না’ বলেও মন্তব্য ডিভিশন বেঞ্চের।
এদিন আদালতে রাজ্য বলেছে, পুলিশ এই টাকা দেয় ক্লাবগুলিকে। জেলা এবং শহর মিলিয়ে ২৮৭৬ ক্লাবকে টাকা দেওয়া হয় ২০২৪ সালে। তিন ক্লাবের তরফ থেকে টাকার হিসেব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রাজ্য, সেগুলো শিলিগুড়ি পুলিশের আওতায়।
রাজ্য আরও জানিয়েছে, গত বছর কলকাতা পুলিশ এলাকায় ২৮৭৬টি পুজো কমিটিকে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেকে হিসেব বা ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দিয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশের তরফ থেকে ৪১৭৯৯টি চেক তৈরি করা হয়েছিল। সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৪১৭৯৫টি পুজো কমিটি এই অনুদান গ্রহণ করেছে, ৪১৭৯২টি পুজো কমিটি হিসেব দিয়েছে।
তবে নতুন যে সব ক্লাব এবার সংযোজিত হয়েছে, তাদেরকে এই হিসেবের তালিকার বাইরে রাখা হবে। গত বছর যে সব ক্লাবগুলিকে টাকা দেওয়া হয়েছিল, তাদেরকেই এই হিসেব দিতে হবে।
আদালত এই রায় ঘোষণার পর বিজেপি কাউন্সিলর তথা শহরের অন্যতম পুজো কমিটির উদ্যোক্তা সজল ঘোষ বলেন, “কোনও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের উচিত নয়, সরকারি টাকা খেলা-মেলা, দুর্গা পূজা বা নমাজে খরচ করা। ট্যাক্সের টাকায় সরকারের উচিৎ মানুষের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
গত সোমবার আদালত সময় বেঁধে দিয়েছিল রাজ্যকে। ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল, ‘যারা টাকা নিয়েও হিসেব দিচ্ছে না, তাদের ব্যাপারে ভাবতে হবে। প্রয়োজনে তাদের অনুদান বন্ধ করে দিন।’ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হলফনামা তলব করা হয়েছিল। আর আজ, বুধবার সেই মামলাতেই রায় দিল হাইকোর্ট।