Pahalgam Attack: ‘রুমে ঢুকে তাড়াতাড়ি লাইট অফ করুন…’, পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে সেই অভিশপ্ত মঙ্গলবারের অভিজ্ঞতা কলকাতার মানিকতলার বরাত জোরে বেঁচে ফেরা পর্যটকদের মুখে

Pahalgam Attack: পহেলগাঁও থেকে পালিয়ে আসার পথে চলন্ত বাসে টিভি নাইন বাংলাকে জানালেন সেই হাড় হিম করা ঘটনার কথা। ঘটনার পরেই আটকে পড়েন হোটেলে। শহরে অলিখিত কারফিউ জারি হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় বাজার দোকান। রাতের অন্ধকার নামতেই হোটেলের দরজা-জানলা বন্ধ করে, আলো বন্ধ করে বসিয়ে রাখা হয়।

Pahalgam Attack:  রুমে ঢুকে তাড়াতাড়ি লাইট অফ করুন..., পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে সেই অভিশপ্ত মঙ্গলবারের অভিজ্ঞতা কলকাতার মানিকতলার বরাত জোরে বেঁচে ফেরা পর্যটকদের মুখে
বাসে ফিরছেন মানিকতলার বাঙালি পর্যটকরাImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Apr 23, 2025 | 12:07 PM

শ্রীনগর:  ওঁদের চোখেমুখে এখনও আতঙ্ক। ওঁরা হয়তো শেষ হয়ে যেতে পারতেন। পহেলগাঁওর বৈসরন উপত্যকায় সেই টুরিস্ট স্পটে যে সেদিনই যাওয়ার কথা ছিল তাঁদেরও। সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল, টাইমে রেডিও হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। টুরিস্ট বাস  ছাড়বে নেকস্ট টুরিস্ট স্পটের উদ্দেশে ছাড়বে,  ঠিক তার আগের মুহূর্তেই পান খবর। খবরটা তখনও ঘোলাঘোলা… পরে যখন সবটা জানতে পারলেন শরীর দিয়ে বয়ে গিয়েছে হিমস্রোত।

পহেলগাঁও থেকে আতঙ্কে পালিয়ে আসছেন কলকাতার মানিকতলার এক ঝাঁক বাঙালি পরিবার। মঙ্গলবার ঘটনার সময় পহেলগাঁর হোটেলে ছিলেন তাঁরা। তৈরি হচ্ছিলেন, ঠিক যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেই স্পটে যাওয়ার জন্য। অল্পের জন্য কপাল জোরে বেঁচে গিয়েছেন বাঙালি পরিবারগুলি।

পহেলগাঁও থেকে পালিয়ে আসার পথে চলন্ত বাসে টিভি নাইন বাংলাকে জানালেন সেই হাড় হিম করা ঘটনার কথা। ঘটনার পরেই আটকে পড়েন হোটেলে। শহরে অলিখিত কারফিউ জারি হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় বাজার দোকান। রাতের অন্ধকার নামতেই হোটেলের দরজা-জানলা বন্ধ করে, আলো বন্ধ করে বসিয়ে রাখা হয়। এখন প্রাণ নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কলকাতায় নিজের পরিজনদের কাছে ফিরে যেতে চাইছেন প্রত্যেকে।

দ্রুত তাঁদের বাসে করে ফেরত আনা হচ্ছে কলকাতায়। এক রাশ ভয়ে-আতঙ্কে চোখমুখ শুকিয়ে গিয়েছে তাঁদের। গোটা বাসে পিনপতন নিঃস্তব্ধতা। এক বাঙালি মহিলা পর্যটক বললেন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বললেন, “আমরা পহেলগাঁওতেই ছিলাম। ঘুরে এসে ভ্যালিতে ঢুকেছিলাম। হঠাৎই গার্ডরা হুইসেল বাজাতে শুরু করলেন। আমরা তখনও কিছুই বুঝতে পারিনি। আমাদের কিচ্ছু বলা হয়নি, কেবল বলা হচ্ছিল, আপনারা এখান থেকে বেরিয়ে যান। বলা হচ্ছিল ভিআইপি ইস্যু হচ্ছে, বেরিয়ে যান। সে সময়ে ড্রাইভারও আমাদের খুঁজছিল। উনিও আমাদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তখন হোটেল থেকে আমাদের কাছে ফোন আসে। ওনারা বলেন, যেখানে আমাদের যাওয়ার কথা সেসময়ে, সেখানে নাকি ১১ জন স্পট ডেড হয়ে গিয়েছে। শিগগিরি সেখান থেকে সরে আসুন। হোটেলে চলে আসি সবাই হুড়মুড়িয়ে, হোটেলে ঢুকেই সব দরজা জানালা বন্ধ করে দেয় ওনারা। বলে দেন, কেউ বেরোবেন না বাইরে, রাতে যদি কেউ আসে, দরজায় কেউ টোকা দিলেও খুলবেন না, আলো বন্ধ করে চুপ করে থাকবেন।”

আরেক বাঙালি পর্যটক সে সময়ে মার্কেটে কেনাকাটা করছিলেন। তিনি বললেন, “কিছুই বুঝতে পারিনি তখন, আমরা তো জানতামই না, হঠাৎ দেখি দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সবাই চুপচাপ। ওখানকার লোক নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। আমরা কিছু বুঝতে না পেরে হোটেলেই ফিরে যাই।” হোটেলের কাছে আসতেই ওখানকার লোক বলতে শুরু করলেন, “তাড়াতাড়ি হোটেলে ঢুকে পড়ুন।” এমনকি পুলিশও তাঁদের এসে বলেছিলেন, প্রত্যেকটা হোটেলের ঘরের লাইট বন্ধ করে রাখতে। কেউ যেন বাইরে না বের হন। ভয়ে এখনও বুক দুরুদুরু পর্যটকদের। আপাতত উপত্যকার শুনশান রাস্তা দিয়েই নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরার অপেক্ষায় তাঁরা।