‘আমি চুরি করিনি… বিশ্বাস কর’, কুণালকে ফোনে বলতে বলতে কেঁদেই ফেললেন পার্থ
Partha Chatterjee: গত তিন বছরে অনেক জল গড়িয়েছে। জেলে যাওয়ার পরই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন কুণাল ঘোষ। এবার পার্থর 'ফেরার পালা'। দল থেকে বিধানসভা, সব ক্ষেত্রেই কামব্যাক করতে চান তিনি। এবার দলের মুখপাত্রকে ফোন করলেন পার্থ।

কলকাতা: রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে অনেক রঙ-বদল দেখেছে বাংলা। আজ যে শত্রু, কাল সেই বন্ধু! একদিন যিনি বলেছিলেন, ‘ওর নাম আমার সামনে নেবে না’, আর আজ তাঁর কাছেই গেল ফোন। দু’জনেই জীবনের একটা সময় জেলে কাটিয়েছেন। সময়কালও মোটামুটিভাবে একই। সব বৈরিতা ভুলে সেই কুণাল ঘোষকে ফোন করে আজ কেঁদেই ফেললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বুধবার সন্ধ্যায় কুণাল ঘোষকে করলেন ফোন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। বেশ কিছুক্ষণ দু’জনের কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, বুধবার ফোন করে কুণালের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন পার্থ। চিকিৎসার ব্যাপারেও খোঁজ নেন তিনি। কথা বলতে বলতে আবেগ তাড়িত হয়ে কেঁদেও ফেলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। মুখে একটাই কথা, ‘আমি চুরি করিনি।’ সূত্রের খবর, এদিন পার্থ বারবার বলেছেন, “আমি চুরি করিনি। বিশ্বাস কর, আমি চুরি করিনি।” এ কথা বলতে বলতে কেঁদেই ফেলেছেন পার্থ।
তিন বছরের বেশি সময় জেলে কাটিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তখন তৃণমূলের প্রথম সারির দাপুটে নেতা। সময় বদলায়। জেল থেকে মুক্তি পান কুণাল ঘোষ। আজ তিনি তৃণমূলের মুখপাত্র। আর তিন বছর তিন মাস জেল খেটে বাড়ি ফিরেছেন সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কুণাল ঘোষ পার্থ সম্পর্কে ঠিক কী বলেছিলেন, তা সাধারণ মানুষের মন থেকে মোছেনি। আর কুণাল সম্পর্কে পার্থ যা বলেছিলেন, সেটাও খুব একটা সৌজন্যের নজির রাখে না।
কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, “যখন আমি অন্যায়ভাবে জেলে বন্দি, আমার সম্পর্কে এই পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিবৃতি দিয়েছিলেন। আমার নাকি মাথায় গণ্ডগোল, আমি পাগল। ওর নাম আমার সামনে করবেন না। আমি উত্তর দেব না। যত নাটক।“ আর পার্থও কম যাননা। জেলে বন্দি থাকাকালীন একদিন আদালত থেকে ফেরার পথে পার্থ বলেছিলেন, “কুণাল ঘোষকে অনেক আগেই তাড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল। ও যা ক্ষতি করছে, বিরোধী দলও করেনি। জেলে এসে জানতে পারলাম, কতটা ঘৃণ্য কাজ করেছে।”
সেই তিক্ততা ভুলেই কি বুধবার এই ফোন? রাজনীতির কারবারিরা এই কথোপকথনে মোটেই লঘু করে দেখছেন না। সৌজন্যের ফোন নাকি কোনও বার্তা দিতে চেয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়?
এই কথোপকথনকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “আমি জানতে চাই ৫২ কোটি টাকা তাহলে কে নিয়েছিল? পার্থ চট্টোপাধ্যায় এটা বলতে পারেন যে, আমি একা চোর না। কিন্তু আমি একাই জেল খাটছি, তাহলে লোকে বিশ্বাস করবে।” তৃণমূল এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ এই কথোপকথনটাকে ‘ব্যক্তিগত বিষয়’ বলেই উল্লেখ করেছেন।
