RG Kar case: ‘সভ্য সমাজে মৃত্যুর বদলে মৃত্যু নিয়ম নয়’, নির্দেশনামায় বললেন বিচারক
RG Kar case: নির্দেশনামায় বিচারক লিখেছেন, অভিযুক্ত জানিয়েছেন যে মদ্যপ অবস্থায় ওইদিন আরজি করের চারতলায় গিয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি যে সেমিনার হলে যাননি, তার কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি। অন্যদিকে, তদন্তকারীদের হাতে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে ওইদিন অভিযুক্ত সেমিনার রুমে গিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে একটাই বিকল্প যে, ওইদিন অভিযুক্ত সেমিনার রুমে গিয়েছিলেন। এবং আকস্মিক লালসা থেকে নির্যাতিতাকে আক্রমণ করেন।
কলকাতা: মৃত্যুদণ্ড নয়। আমৃত্যু কারাদণ্ড। তিলোত্তমাকাণ্ডে সোমবার সাজা শুনিয়েছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। এই মামলা বিরলের মধ্যে বিরলতম নয় বলেও পর্যবেক্ষণ তাঁর। ১৭২ পাতার নির্দেশনামায় তিলোত্তমাকে খুনের পিছনে দোষীসাব্যস্ত সঞ্জয় রাইয়ের মোটিভ কী ছিল, সেকথাও উল্লেখ করেছেন বিচারক।
গত বছরের ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে তিলোত্তমার দেহ উদ্ধার হয়। তারপর কেটে গিয়েছে ১৬৪ দিন। নৃশংস এই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে গত শনিবার দোষী সাব্যস্ত করে শিয়ালদহ আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬ এবং ১০৩(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন। আর এদিন সাজা ঘোষণা করলেন।
সঞ্জয়ের কী সাজা হতে পারে, তা নিয়ে এদিন সকাল থেকেই জল্পনা চলছিল। শনিবার তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার সময় বিচারক জানিয়েছিলেন, ন্যূনতম ১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে সঞ্জয়ের। এদিন নির্দেশনামায় বিচারক লেখেন, “এটা ঘটনা যে সভ্য সমাজে দাঁতের বদলে দাঁত, নখের বদলে নখ, মৃত্যুর বদলে মৃত্যু নিয়ম নয়। কিন্তু, এটাও সমান সত্য যে যখন কোনও মানুষ জন্তু হয়ে যায়, সমাজের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তখন আইন বলছে সে জীবন থেকে বঞ্চিত হতে পারে।” রায়ে বিচারক উল্লেখ করেছেন, “যাবজ্জীবন হল নিয়ম, আর মৃত্যুদণ্ড ব্যতিক্রম।”
এই খবরটিও পড়ুন
তিলোত্তমাকে খুনের মোটিভ কী? নির্দেশনামায় বিচারক উল্লেখ করেছেন, তিলোত্তমা ও সঞ্জয়ের মধ্যে আগে থেকে কোনও যোগসূত্র ছিল না। খুনের উদ্দেশ্যে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার যে হাসপাতালে ঢোকেননি, সেকথা উল্লেখ করেছেন। রায়ে বিচারক লিখেছেন, অভিযুক্ত জানিয়েছেন যে মদ্যপ অবস্থায় ওইদিন আরজি করের চারতলায় গিয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি যে সেমিনার হলে যাননি, তার কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি। অন্যদিকে, তদন্তকারীদের হাতে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে ওইদিন অভিযুক্ত সেমিনার রুমে গিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে একটাই বিকল্প যে, ওইদিন অভিযুক্ত সেমিনার রুমে গিয়েছিলেন। এবং আকস্মিক লালসা থেকে নির্যাতিতাকে আক্রমণ করেন। তবে এটা পূর্বপরিকল্পিত অপরাধ নয়। নির্যাতিতা যে ওই রুমে রয়েছেন, তা জানতেন না অভিযুক্ত।
প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষার ব্যর্থতার কথাও রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। রাজ্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে অসমর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। ওই হাসপাতালে যেখানে যেকেউ যখন খুশি ঢুকে যেতে পারেন, সেকথা সাক্ষীদের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক।