
কলকাতা ও মেদিনীপুর: সল্টলেকের দত্তাবাদের এক সোনার দোকানের মালিককে খুনের মামলায় ২ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম রাজু ঢালি ও তুফান থাপা। রাজু ঢালি রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের গাড়ির চালক। তাঁর বাড়ি রাজারহাটে। প্রশান্ত বর্মণ কলকাতা এলে তাঁর গাড়ি চালান রাজু। অপরদিকে, উত্তরবঙ্গ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তুফান থাপাকে। শুক্রবার ধৃত ২ জনকে বিধাননগর আদালতে তোলা হয়। এদিকে, এই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত রাজগঞ্জের বিডিও-র বিরুদ্ধে পুলিশ এখনও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মৃতের পরিবার।
গত ২৮ অক্টোবর নিউটাউনের যাত্রাগাছির খালধার থেকে স্বপন কামিল্যা নামে ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুর থানার দিলমাটিয়া গ্রামে। ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের। গত অগস্টে প্রশান্ত বর্মণের বাড়ি থেকে কিছু সোনার গয়না চুরি গিয়েছিল। পরে বিডিও-র বাড়ির কেয়ারটেকার জানান, চুরি যাওয়া সোনা স্বপন কামিল্যার কাছে বিক্রি করেছেন। সেই মতো রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণ পশ্চিম মেদিনীপুরে স্বপন কামিল্যার বাড়ি যান। স্বপন বাড়িতে সেইসময় ছিলেন না। অভিযোগ, তাঁকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেন বিডিও। এমনই একটি ভিডিয়ো মোহনপুর থানার হাতে তুলে দেয় স্বপনের পরিবার।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় ১০ দিন পর ২ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন রাজগঞ্জের বিডিও-র গাড়ির চালক হওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠছে। এদিন ধৃতদের আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা জানতে চান, কারও নির্দেশে এই খুন তাঁরা করেছেন কি না। ধৃতরা কোনও জবাব না দিয়েই পুলিশের গাড়িতে উঠে পড়েন। পুলিশও কিছু বলতে চায়নি। ধৃতদের এদিন আদালতে তোলা হলে বিচারক ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এদিকে, এদিন স্বপন কামিল্যার বাড়িতে দেখা যায় শোকে মুহ্যমান পরিবারের লোকজন। কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতের বাবা-মা, স্ত্রী। ২ জনের গ্রেফতার নিয়ে ভাবছেন না তাঁরা। মূল অভিযুক্তকে এখনও কেন গ্রেফতার করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। মৃত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাবা বলেন, “প্রশাসনের তরফে আমাদের বাড়িতে কেউ আসেনি। প্রশান্ত বর্মণের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।” মৃতের পরিবারের আর এক সদস্য বলেন, “সাধারণ মানুষ হলে পরদিনই গ্রেফতার করা হত।” সবমিলিয়ে রাজগঞ্জের বিডিও-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে মৃতের পরিবারের।