Anubrata Mondal: ‘অনুব্রত মণ্ডলের অবস্থা যেন বিকাশ দুবের মতো না হয়ে যায়’, কটাক্ষ বিরোধীদের

Anubrata in ED Custody: উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিংবা হালে কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর তৃণমূল যে কড়া পদক্ষেপ করেছে, তেমন কিছু এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি অনুব্রতর বেলায়।

Anubrata Mondal: ‘অনুব্রত মণ্ডলের অবস্থা যেন বিকাশ দুবের মতো না হয়ে যায়’, কটাক্ষ বিরোধীদের
দিল্লিতে অনুব্রত মণ্ডল

| Edited By: Soumya Saha

Mar 18, 2023 | 4:40 PM

কলকাতা ও নয়া দিল্লি: গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইডির হেফাজতে রয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসারদের চোখা চোখা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর হিসেবরক্ষক মণীশ কোঠারিও। মেয়ে সুকন্যাকেও বার বার তলব করা হচ্ছে দিল্লিতে। কিন্তু কেষ্ট রয়েছেন কেষ্টতেই! সূত্রের খবর, ইডির তদন্তকারী আধিকারিককে ‘বীরভূমের বাঘ’ কেষ্ট মণ্ডল বলেছেন, ‘আমার কিচ্ছু হবে না। আমার পিছনে দল রয়েছে।’ স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, এতটা আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন কীভাবে কেষ্ট? উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিংবা হালে কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর তৃণমূল যে কড়া পদক্ষেপ করেছে, তেমন কিছু এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি অনুব্রতর বেলায়। এমনকী কেষ্টকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পরও দলের তরফে সেভাবে কোনও মন্তব্য আসেনি। গতকাল কালীঘাটে শাসক নেতাদের যে বৈঠক ছিল, সেখানেও কেষ্ট প্রসঙ্গ সেভাবে উঠে আসেনি বলেই খবর। গ্রেফতারের পর দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হলেও খাতায় কলমে অনুব্রতই এখনও তৃণমূলের জেলা সভাপতি।

দলের এমন অবস্থানের জোরেই কি পরিচিত রাজনৈতিক গণ্ডির বাইরে গিয়েও গলার জোর কমছে না কেষ্টর? এর আগে দলের তরফে কখনও বীর কখনও বাঘের সঙ্গে তুলনা টানায় তা ব্যাকফুটেই ফেলেছিল কেষ্টকে। আদালতে তাঁর জামিনের বিরোধিতা করতে প্রভাবশালী তত্ত্বকে আরও জোরালো করেছিল ইডি। কিন্তু এখন খোদ কেষ্টর মুখে দলের পাশে থাকার বার্তায় কি উল্টে বিড়ম্বনায় শাসক শিবির? কীভাবে এতটা আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন অনুব্রত? তৃণমূল নেতা কোহিনুর মজুমদার অবশ্য বিষয়টিকে কেষ্টর ব্যক্তিগত মন্তব্য হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন। বললেন, ‘উনি বিশ্বাস করেন দল ওনার পাশে আছে। দল এখনও তাঁকে সাসপেন্ড করেনি, বা তাড়ায়নি। এটাও ঠিক যে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিশাল কোনও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, এমন তথ্যও প্রকাশ্যে আসেনি।’ তাই বিষয়টি নিয়ে অযথা জলঘোলা করা হচ্ছে বলেই মনে করছেন তিনি।

যদিও বিরোধী শিবির বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখছে না। বিজেপি নেতা রাজর্ষি লাহিড়ি প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, কেষ্ট মণ্ডলের মেয়ের নামের যে বিপুল সম্পত্তির কথা প্রকাশ্যে এসেছে, তা নিয়ে। টিভি নাইন বাংলায় রাজর্ষি বললেন, ‘কেষ্ট মণ্ডলের মেয়ের নামে সম্পত্তির তালিকা সংবাদমাধ্যম দেখিয়ে দিয়েছে।’

সিপিএম নেতা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় আবার অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লিতে গিয়েও এই অক্সিজেন পাওয়াকে খুব স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন। বলছেন, ‘অনুব্রত মণ্ডলের হিসেবরক্ষক গ্রেফতার হয়েছেন। অনুব্রতর ডাঁয়ে-বাঁয়ে যাঁরা যাঁরা ছিলেন, সবাই কোটিপতি।’ বাম যুব নেতার বক্তব্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতার বাড়ি থেকে যেমন টাকার পাহাড় পাওয়া গিয়েছিল, কুন্তল বা শান্তনুর ক্ষেত্রে তেমন কিছু দেখা যায়নি। তাও কুন্তল-শান্তনুদের বহিষ্কার করেছে দল। তাহলে, অনুব্রতর ক্ষেত্রে কী এমন বিড়ম্বনা রয়েছে, যে দল থেকে বের করা যাচ্ছে না? প্রশ্ন সায়নের। তিনি বলেন, ‘এই মুখ্যমন্ত্রীই যিনি রাস্তায় নেমে গায়ে প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে, গোটা মন্ত্রিসভাকে হাঁটিয়ে বলেন, আমরা সবাই চোর, আমাদের গ্রেফতার করুন। ফলে এতে অভিযুক্তরা অক্সিজেন পায়, এতে নতুন কিছু নেই।’

কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আবার টিভি নাইন বাংলায় বললেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে অনুব্রত মণ্ডলের অবস্থা যেন বিকাশ দুবের মতো না হয়ে যায়। কারণ, বাঘ খাঁচার বাইরে খুব বেশিক্ষণ বেঁচে থাকে না। লোকজন পিটিয়ে মেরে ফেলে।’ কংগ্রেস নেতার কথায়, অনুব্রত মণ্ডলের পাশে যে দল রয়েছে তাও নতুন নয়। ইডি যখন প্রথম অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে চেয়েছিল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কেন্দ্রীয় সংস্থার সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। আক্রমণের সুর আরও চড়িয়ে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যখন প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়, তখন ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলতে সময় নেন না।’