
কলকাতা: তৃণমূলের অন্দরে বদলাচ্ছে সমীকরণ? পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের প্রতি ‘হতাশাই’ এগিয়ে দিচ্ছে শোভন চট্টোপাধ্য়ায়কে? সম্প্রতি দার্জিলিঙে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতের পর বড় দায়িত্ব পেয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এনকেডিএ বা নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে। আর তারপরেই শোভনের সমর্থনে পড়ল পোস্টার। তাও আবার খোদ পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বিধানসভা এলাকায়।
দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে এনকেডিএ চেয়ারম্যান হিসাবে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিযুক্ত করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে বেহালা নাগরিক মঞ্চ। আর তারপরেই তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক গুঞ্জন। বেহালা পশ্চিমে ২৫ বছর ধরে বিধায়ক পদে থেকেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে গিয়ে এখন তিনি জেলবন্দি।
অবশ্য, পার্থর জেলমুক্তির সম্ভবনাও যে কম, এমনটা নয়। কিন্তু জেলমুক্তি হলেও কি ওই কেন্দ্রের জন্য টিকিট পাবেন পার্থ? সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। গত কয়েকবছরে তাঁর নামের উপর যে ‘লাল কালির’ দাগ পড়েছে, তা কি এত সহজে মুছে দেওয়া সম্ভব? একাংশের মতে, সেই কথা ভাবাচ্ছে ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বদেরও। আর ততই জোড়াল হচ্ছে শোভনের দলে ফেরা ও পার্থর কেন্দ্র থেকে টিকিট পাওয়ার সম্ভবনা।
টিকিট বা রাজনীতির কচকচানি নয়। বেহালা পশ্চিমের ওই অংশকে শোভনের অতীতের সঙ্গে জুড়ে দিতে মরিয়া তৃণমূল শিবির। এদিন দলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রার্থী কে, কোথায় হবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর যেখানে পোস্টার পড়েছে অর্থাৎ ১৩০ ও ১৩১ নম্বর ওর্য়াড। বলে রাখা প্রয়োজন, ওই ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আদি বাড়ি। এই ওয়ার্ড থেকেই তিনি কাউন্সিলর হয়েছেন, মেয়র হয়েছেন, এখানকার মানুষের সঙ্গে শোভনদার একটি আত্মীকতা রয়েছে।’
অন্যদিকে বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক তথা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্য়ায় বললেন, ‘উনি দলে ফিরেছেন এমনটা নয়। শুনেছি এই রকম একটা পোস্টার লাগানো হয়েছে। হয়তো শুভাকাঙ্খিরা লাগিয়েছেন। তবে বেহালায় এখনও শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের তৃণমূলে কামব্যাক নিয়ে কোনও উচ্ছাস তৈরি হয়নি। আর উনি যে দিন এনকেডিএ-র চেয়ারম্য়ান হলেন, আমি তো সেই দিনই বললাম, একটা কাজের মানুষ অকারণে ৮টা বছর ঘরে বসে নষ্ট করে দিলেন। উনি যদি আবার দলে ফেরেন, তা হলে আমি নিশ্চয়ই স্বাগত জানাব।’
অবশ্য বেহালা পশ্চিম থেকে তৃণমূলে কে প্রার্থী হবে, কে হবে না, সেই নিয়ে তাঁদের দলের কিছু যায় আসে না বলেই মত বিজেপি নেতা সজল ঘোষের। তাঁর কথায়, ‘এই পোস্টার, চেয়ারম্য়ান পদ আসলে শোভন নয়, বৈশাখীদির জয়।’