কলকাতা: টানা ৯৬ ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভ। তাতেই এল সাফল্য। সমস্ত পড়ুয়াকে টিকা দেওয়ার আশ্বাস দিল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাল্টা, বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারাও জানিয়ে দিল, ‘অবস্থান প্রত্যাহার করা হল’। একই সঙ্গে এদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতর বিজয় মিছিলও করেন আন্দোলনকারীরা।
প্রেসিডেন্সির আন্দোলনকারীদের তরফে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, ‘প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নয় দফা দাবিকে সামনে রেখে টানা ৯৬ ঘন্টা অবস্থান-আন্দোলনের চাপে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ দাবীগুলি মানতে বাধ্য হয়েছে। আন্দোলনের চাপে কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিনেশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছাত্র সংসদকে দেওয়া কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকায় কর্তৃপক্ষের তরফে অবিলম্বে এই কাজ শুরু করার কথা বলা হয়েছে এবং ছাত্র সংসদকে গোটা প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে।’
একই সঙ্গে আন্দোলনকারীরা জানান, ‘লাইব্রেরি থেকে বই ইস্যুর ব্যাপারে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। রিভিউ-রিএক্সামের বিষয়টিও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রায় দেড় বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডিকার্ড এবং অবিলম্বে চলতি শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের গ্রেড কার্ড ও ডিগ্রি সার্টিফিকেট ইস্যু করার ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষ সম্মত হয়েছে।’
তবে অবস্থান প্রত্যাহার করা হলেও, এই সমস্ত আশ্বাস কতটা বাস্তবায়িত হল সেদিকেও যে নজর থাকবে পড়ুয়াদের সে কথাও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষের থেকে নিয়মিত আপডেট নেবে ছাত্র সংসদ। একই সঙ্গে ক্যাম্পাস খোলার দাবিতেও আন্দোলন জারি রাখবে ছাত্র সংসদ।
প্রসঙ্গত, ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে টিকাকরণ-সহ পুনরায় অফলাইন ক্লাস শুরু করার দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার বিক্ষোভ চলেছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে। মঙ্গলবার থেকে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। বুধবার, বৃহস্পতিবারও দিনভর তা চলে। এর আগে সোমবার রাতভর ক্যাম্পাসের ভিতরে অবস্থান বিক্ষোভ জারি থাকে ছাত্রছাত্রীদের। এরপর মঙ্গলবার সকাল ১১ টা নাগাদ গণ জমায়েতেরও ডাক দেওয়া হয়।
মূলত আন্দোলনকারীদের দাবি, বিনামূল্যে ভ্যাকসিনেশনের পাশাপাশি নিয়মিত অফলাইন ক্লাসের মতো মোট ১০ দফা বিষয়ে আলোকপাত করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এর মধ্যে ক্যাম্পাসের সমস্ত ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে টিকাকরণের ব্যবস্থা যেমন রয়েছে, তেমনই অবিলম্বে লাইব্রেরির কাজ পুনরায় শুরু করার দাবিও রয়েছে। পাশাপাশি বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলোর ল্যাবরেটরি খুলে রেমেডিয়াল ক্লাসের ব্যবস্থা করার কথাও বলেন তাঁরা।
তা ছাড়া স্টুডেন্টস সেকশনের স্বাভাবিক কাজকর্ম পুনরায় চালু করা, ২০২১ সালে পাশ করে যাওয়া ছাত্র ছাত্রীদের স্কলারশিপ, ভর্তি ইত্যাদির কারণে অবিলম্বে তাদের গ্রেড কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করার কথাও বলেন তাঁরা। অবিলম্বে রিভিউ এবং রি-এক্সামের ব্যবস্থারও দাবি ওঠে। ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য ছাত্র সংসদ সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে কমিটি গঠন করার কথা বলেন।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: হাইকোর্টে ধাক্কা শিক্ষা দফতরের, টাকা ফেরতের নির্দেশে পড়ল স্থগিতাদেশ