
কলকাতা: বৈধতা না থাকা সত্ত্বেও কয়েক’শ পড়ুয়া নিয়ে রমরমিয়ে চলছিল স্কুল। রেজিস্ট্রেশন আটকে যাওয়ার পরই বিষয়টা সামনে আসে। রিপণ স্ট্রিটের সেই বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে এবার আরও বিস্ফোরক অভিযোগ। স্কুলের বৈধতা কেন নেই? কেন স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতি? এ কথা জানতে যখন তৎপর হাইকোর্ট, তখন সামনে এল ঘুষ দিতে চাওয়ার অভিযোগ। স্কুলের গিয়ে সব তথ্য জানার জন্য চাপ আদালতের তরফে স্পেশাল অফিসার নিযুক্ত করা হয়েছিল আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্যকে। আজ বৃহস্পতিবারের শুনানিতে তিনিই জানিয়েছেন, স্কুলের বিরুদ্ধে রিপোর্ট না দেওয়ার জন্য স্কুলের তরফ থেকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বিল্বদল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, স্পেশাল অফিসার হিসেবে তাঁকে যে ৮০ হাজার টাকা আদালত দেবে, সেটাও তিনি রামকৃষ্ণ মিশনে দিয়ে দেবেন।
এ কথা শুনে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু মন্তব্য করেন, “তার মানে এখানে কোনও গোলমাল আছে। ভবিষ্যতে পড়ুয়াদের কোনও সমস্যা হলে তার দায় থাকবে স্কুলের।” স্কুলকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “আপনারা স্পেশাল অফিসারকে রেজিস্টার পর্যন্ত দিলেন না, কী লুকনোর জন্য?”
উত্তরে স্কুলের আইনজীবী জানান, স্কুলে মেরামতির কাজ চলছে। সব নথি গোডাউনে রাখা আছে সযত্নে। নথি না দিতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে আইনজীবী জানান, ২০২২-এর ৩১ মে স্কুলের বৈধতা বাতিল করা হয়েছিল। তারপরে স্কুল আবার বৈধতা পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে। স্কুলের নতুন বিল্ডিং-এর বৈধতা আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্কুলের আইনজীবী বলেন, “আমাকে স্কুলের দুই শিক্ষক মামলার আগে বলেছিলেন, স্পেশাল অফিসারকে কিছু টাকা দিলে আমাদের কোনও সমস্যাতে পড়তে হবে না। আমি তাঁদের তখনই বলেছিলাম, এই স্পেশাল অফিসারকে আমি চিনি, উনি কোনওদিনই টাকা নেবেন না।”
অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, “স্কুলে যে পড়ুয়ারা আছে, তাদের কেরিয়ারের কী হবে? আমাদের কেন আদালতে আসতে হলো? স্কুলের যদি বোর্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে তাহলে স্কুল কেন আগে আদালতে এল না?”
আদালত এদিন নির্দেশ দিয়েছে, পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সংক্রান্ত কী পদক্ষেপ স্কুল করছে, তা আদালতে জানাতে হবে হলফনামা দিয়ে। এই মামলায় কলকাতা পুরসভাকে পার্টি করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। ৪ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।