
কলকাতা: ২০১৩ সাল নাগাদ ঝাঁ চকচকে বিজ্ঞাপন দেখে ঝাঁ চকচকে ফ্ল্যাটের আশায় লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে বসেছিলেন অনেকেই। কিন্তু, কে জানত তারপর প্রায় একযুগ পেরিয়ে গেলেও বিলাসবহুল সেই ফ্ল্যাটের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। বিগত কয়েক দশকে বাইপাস লাগায়ো এলাকায় প্রচুর সাধারণ আবাস যেমন গজিয়ে উঠেছে, তেমনই বিলাসবহুল আবাসন ওই সোজা কথায় টাওয়ারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। সায়েন্স সিটির কাছেও ‘অবনি গ্রান্ডের’ দু’টি টাওয়ার হওয়ার কথা ছিল। নির্মাতা হিসাবে জানা গিয়েছিল ‘অবনি প্রজেক্টস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের’ নাম। কিন্তু কে জানত লাখ লাখ টাকা ঢালার পর বছরের পর বছর কেটে গেলেও মিলবে না ফ্ল্যাট। অনেকে তো আবার ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েও অগ্রিম দেন। এখনও দিয়ে চলেছেন ইএমআই। ইতিমধ্যেই মামলা চলছে ন্য়াশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনাল (NCLT)-তে। সেখান থেকে বেশ কিছু নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
তবে ন্য়াশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনালের আগে জল গড়িয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। ২০১৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ এই মামলার শুনানি শুরু করে। তখনও বেশ কিছু নতুন বিষয় সামনে আসে। যদিও পরে মামলাটি এনসিএলটিতে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে ভুক্তভোগী যে শুধু বাংলার মানুষ এমনটা নন, রয়েছেন ভিনরাজ্যের বাসিন্দারাও। ক্রেতারা বলছেন শুধুই ‘অবনি প্রজেক্টস’-কে নিয়ে টানাপোড়েন নয়। তাঁরা যখন লিখিত চুক্তি করতে যান তখন দেখেন অবনি প্রজেক্টসের সঙ্গে ‘অ্যাডোন হোটেলস অ্যান্ড হসপিটালিটি লিমিটেডের’ও নাম রয়েছে। কিন্তু এরইমধ্যে আবার ন্য়াশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনালের শুনানিতে ‘অ্যাডোন’ সাফ জানিয়ে দেয় তাঁরা অবনির সঙ্গে যৌথ নির্মাণ কাজের যে চুক্তি তা খারিজ করে দিয়েছে। ফলে তাঁরা কোনওদিক থেকেই আর এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাতেই সমস্যা গভীর থেকে আরও গভীরতর হয়েছে।
সূত্রের খবর, মোট সাড়ে ৩ হাজার একর জায়গায় দু’টি টাওয়ার হওয়ার কথা ছিল। ফ্ল্যাটের সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। একটা টাওয়ার ১৯ তলা, অন্যটি ২২ তলা। ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০টি ফ্ল্যাটের ক্রেতা NCLT-র দ্বারস্থ হয়েছেন। ক্রেতারা বলছেন, যা হচ্ছে তা পুরোদমে বিশ্বাসঘাতকতারই সামিল। চাপানউতোর চললেও এখনও পর্যন্ত ‘অ্যাডোন’ বা ‘অবনি’র তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।