
ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর পর চার দিন পার হয়ে গিয়েছে। এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত। শহর পেরিয়ে জেলাতেও প্রকাশ্যে আসছে বিক্ষোভের ছবি। প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার রাস্তায় নেমেছিলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। আর রাতভর অবস্থানে বসেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা। আনিসের মৃত্যুর তদন্ত ও বিচারের আর্জি নিয়ে অবস্থান পড়ুয়াদের। এরই মধ্যে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী, পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, আনিস মৃত্যু কাণ্ডে ২ পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আনিস খুনে প্রতিবাদে সামিল যাদবপুরের পড়ুয়ারা। যাদবপুর থানার সামনে মশাল প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন তাঁরা। যাদবপুর থেকে শুরু করে গোলপার্ক অবধি এই প্রতিবাদ মিছিল চলবে। মিছিল থেকে স্লোগান উঠেছে, ‘জবাব চাই, বিচার চাই’। আনিস খুন কাণ্ডে যুক্ত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে এই প্রতিবাদ মিছিল।
ডিজি মনোজ মালব্য আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে আনিস মৃত্যুর সত্য উদঘাটিত হবে। তিনি অভিযোগ করেছেন, আনিস কাণ্ডের তদন্তের জন্য গঠিত সিটকে সহযোগিতা করছে না পরিবার।
আনিস মৃত্যুকাণ্ডে গ্রেফতার দুই পুলিশ কর্মী। নবান্নে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ২ জনকে হেফজতে নেওয়া হয়েছে।
আনিস কাণ্ডে পথে প্রতিবাদ। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে পার্ক সার্কাসে মিছিল এসএফআই-এর। সেখানে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি। অবরুদ্ধ পার্ক সার্কাস। বাড়ানো হচ্ছে বাহিনী। নেত্রী দীপ্সিতা ধর বলেন, “আমরা আন্দোলন চালাব। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালাচ্ছিলাম। পুলিশ আমাদের পথ আটকায়। কোনও মহিলা পুলিশ ছিল না। এটা কি কোনও গণতন্ত্র?”
আনিস মৃত্যু রহস্যে উত্তাল গোটা রাজ্য। অবস্থান বিক্ষোভ থেকে মিছিল, স্লোগানে তপ্ত কলকাতা। আজও একাধিক জায়গায় পড়ুয়াদের মিছিল। মঙ্গলবার থেকেই অবস্থানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের SFI কর্মীরা। দোষীরা সাজা না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থানের ডাক। রাতভর অবস্থানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারাও।
আনিস খানের রহস্যমৃত্যুতে ফের সিটের জেরার মুখে আমতার পুলিশ কর্মীরা। এদিকে, এদিন আনিস খানের বাড়িতে যান বাদশা মৈত্র, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়রা। আনিসের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।
সিটের নজরে বাগনান ও আমতা থানার জিডি এন্ট্রি। আনিস খানের মৃত্যুর দিন থানায় কোন কোন জেনারেল ডায়েরি হয়েছিল, তা জানতে চান সিটের আধিকারিকরা। আনিসের মৃত্যুর দিন রাতে পুলিশ কর্মীরা কোথায় ছিলেন, সেটা জানতেই এই পদক্ষেপ সিটের।
আজ আমতা থানার সামনে বিক্ষোভে উপস্থিত থাকবেন এসএফআই-এর সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস ও ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। থাকবেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র, দেবদূত ঘোষসহ অন্যান্যরা।
মঙ্গলবারের পর বুধবারও ফের পথে নামলেন পড়ুয়ারা। এসএফআই সমর্থকরা এ দিন পথ অবরোধ করেন। যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা রাস্তায় নামেন এ দিন।
ময়নাতদন্তে কারচুপি। পরিবারের অভিযোগে শেষমেশ টনক সিটের। কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্তে তোড়জোড়। ম্যাজিস্ট্রেটকে ইতিমধ্যেই আর্জি জানানো হয়েছে। হঠাৎ বুধবার সকালে ব়্যাফ নিয়ে আনিসের বাড়িতে বাগনানের অফিসার। পরিবারের তরফে আগে থেকেই অভিযোগ করা হচ্ছিল, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কিছু কারচুপি হয়েছে।
আরও পড়ুন : Anis Khan Death: কবর থেকে তুলে ফের আনিসের দেহের ময়নাতদন্ত? তৎপর সিট
আনিসকাণ্ডে আরও জলঘোলা। সিবিআই-এর দাবিতে সুর চড়াতে এবার হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে খান পরিবারকে। এমনটাই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠছে। জানা যাচ্ছে, গভীর রাতে আনিস খানের দাদা সাবির খানের মোবাইলে ফোন আসে। ‘কেন্দ্রীয় তদন্ত চাইলে বাপ-বেটা খুন’, ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। কল রেকর্ডিং এসেছে TV9 বাংলার হাতে। তবে সেই কল রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা।
আরও পড়ুন : Anis Khan Death: আনিস মৃত্যু রহস্য আরও জলঘোলা, প্রকাশ্যে এক্সক্লুসিভ অডিয়ো ক্লিপ!
মঙ্গলবারের প্রতিবাদ মিছিল থেকে অনেক পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে বুধবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বলেন, ‘প্রতিবাদীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা জানতে চাই আমাদের কি ভুল ছিল? প্রতিবাদী ছাত্র ছাত্রীদের ওপর কেন লাঠিচার্জ করা হলো আমরা সেটা জানতে চাই।’ কালো ব্যাজ পরে মানববন্ধন হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। পড়ুয়াদের দাবি, পুলিশ গতকাল বলেছে নেতাদের ধর। অথচ মিছিলে কোনও নেতা ছিল না, সবাই ছিল ছাত্র ছাত্রী।
‘যেভাবে আনিসের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাতে রাজ্য সরকারকে বলব আনিসের পরিবারের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করুন।’ এমনটাই বললেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত গ্রেফতার করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। পড়ুয়ারা এ দিন বলেন, আনিস প্রতিবাদ করত, তার পুরস্কার হিসেবে সে পেল খুন? ছেলে পুলিশ কেন গায়ে হাত দেবে? সেই প্রশ্নও তুললেন মঙ্গলবারের মিছিলে থাকা ছাত্রীরা।