কলকাতা: প্রথম দিকে বামেদের বুক স্টলে ভিড়ের নিরিখে কিছুটা ম্লান ছিল জাগো বাংলার (Jago Bangla) বুক স্টলগুলি। বইয়ের ভিন্নতা কম, ফলে পাঠকের ভিড়ও সে অর্থে দেখা যায়নি। কিন্তু শুরুটায় তেমন চমক দিতে না পারলেও শেষবেলায় কিন্তু চাগিয়ে খেলেছে শাসকদলের মুখপত্রের স্টলগুলি। এমনও হয় সপ্তমী শেষ হতে না হতেই নতুন করে ছাপাতে হয়েছে বহু বই।
বিভিন্ন পুজো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। তবে সে সবে কোনওদিনই বামেরা নেই। পরিবর্তে উৎসবের সময়ে বিভিন্ন মণ্ডপ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বা মোড়ে বুক স্টল থাকে তাদের। আর সেখানে বসেই বিভিন্ন ধরনের বই বিক্রি করেই জনসংযোগ সারেন বাম নেতা-কর্মীরা। ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের বই থাকে। সে তালিকায় সিপিএমের লড়াইয়ের গল্প যেমন আছে, তেমনই আছে এসইউসিআই বা সিপিআইএমএলও।
তবে রাজ্যে পালা বদলের পর থেকে বামেদের স্টলের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। ধীরে ধীরে সে জায়গায় এসেছে তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলার স্টল। যদিও সেখানে বইয়ের ভিন্ন স্বাদ পেতে কষ্ট করতে হয়। শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বিভিন্ন বই রয়েছে। সঙ্গে দু’একজন সাংবাদিক বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্রিক বই লিখেছেন, তা-ও রয়েছে। এই অবধিই।
কিন্তু তাতে প্রভাব পড়েনি জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যা বিক্রিতে। বরং তা বেড়েছে। তেমনই দাবি জাগো বাংলা কর্তৃপক্ষের। তাই সপ্তমী শেষ হতে না হতেই নতুন করে ছাপাতে হয়েছে বই। অষ্টমীর রাতেই সেগুলি আবার প্রাপকদের কাছে পৌঁছতে শুরু করেছিল।
সব মিলিয়ে ৭৩ হাজার বই বিক্রি হয়েছে জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যার। যদিও আরেকটি অংশ দাবি করেছে , তা ৭৭ থেকে ৭৮ হাজার পর্যন্ত পৌঁছেছে। শুধুমাত্র শহরেই ২০০টির মতো রাজ্যের শাসক দলের মুখপত্রের স্টল ছিল। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কংগ্রেসের ভূমিকা তীব্র আক্রমণ যেমন ছিল, তেমনই জাগো বাংলায় কলম ধরেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে নানা বিষয় ভিত্তিক লেখাও জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যাকে সমৃদ্ধ করেছিল বলে দাবি প্রকাশনা টিমের।
রাজনীতির জগতের মানুষের লেখা রাজনীতির আঙিনায় বেরিয়েছিল। সাহিত্যচর্চাও ছিল। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, নলিনী বেরা, প্রচেত গুপ্তর মতো সাহিত্যিকের গল্প যেমন এই সংখ্যায় ছিল, তেমনই ছিল জয় গোস্বামী, সুবোধ সরকার, বীথি চট্টোপাধ্যায়দের কবিতা। সব মিলিয়ে একবারে কমপ্লিট প্যাকেজ ছিল। তাই উৎসব সংখ্যার চাহিদা বেড়েছে বলেই মত অতিথি সম্পাদক রূপা মজুমদারের।
অবশ্য এই পুরো কর্মকাণ্ডটি যিনি পুরোপুরি সামলেছেন সেই কুণাল ঘোষ প্রথম থেকেই বলেছিলেন, “জাগো বাংলা এক সময় সাপ্তাহিক ছিল। এখন তা দৈনিক হয়েছে। সেখানে মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলছেন তা যেমন থাকছে, তেমনই একটা সম্পূর্ণ খবরের কাগজ বলতে যা বোঝায় তাও এটা। দেশ-বিদেশ থেকে সংস্কৃতির চর্চা, খেলা, কর্মজীবনের জন্য যা প্রয়োজন তাও থাকে। নানা আলোচনা থাকে। সব মিলিয়ে একটা সম্পূর্ণ খবরের কাগজ। শারদ সংখ্যাতেও সবরকম বৈচিত্র্য রয়েছে। মানুষ ভাল ভাবেই তা গ্রহণ করছেন।” তবে সপ্তমীতেই যে নতুন করে বই ছাপাতে হবে তা বোধহয় তিনিও ভাবেননি।
আরও পড়ুন: Biman Basu: সিপিএমে ‘অনুপ্রবেশ’ হচ্ছে, শত্রু ‘চর’ পাঠাচ্ছে! একের পর এক বিস্ফোরক দাবি বিমান বসুর