বুক ফুঁড়ে শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছিল রড, মিরাকেল অস্ত্রোপচারে তরুণীকে বাঁচালেন SSKM-এর চিকিৎসকরা

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Jun 15, 2021 | 9:47 PM

দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টার অপারেশন মঙ্গলবার ভোরে সফলভাবে শেষ হয়। কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের চিকিৎসক শুভেন্দু শেখর মহাপাত্রের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল এই অস্ত্রোপচার করেন।

বুক ফুঁড়ে শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছিল রড, মিরাকেল অস্ত্রোপচারে তরুণীকে বাঁচালেন SSKM-এর চিকিৎসকরা
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

কলকাতা: মিরাকেল করে দেখালেন এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা। পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে সঙ্কটজনক অবস্থায় থাকা এক তরুণীর প্রাণ বাঁচল জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। কার্যত অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন এসএসকেএম হাসপাতালের কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টার অপারেশন মঙ্গলবার ভোরে সফলভাবে শেষ হয়। কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের চিকিৎসক শুভেন্দু শেখর মহাপাত্রের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল এই অস্ত্রোপচার করেন।

গত রবিবার পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২১ বছরের ওই তরুণী। দুর্ঘটনার সময় অটোর চালকের আসনের পাশে থাকা একটি রড ওই তরুণীর দেহকে কার্যত ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। এই অবস্থায় তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে। পরীক্ষা করে চিকিৎসরা দেখেন, রডটি তরুণীর বুক ফুটো করে ফুসফুসের নীচ হয়ে হৃৎপিণ্ডের পিছন দিক দিয়ে বাঁ-দিকের বুক ফুটো করে দিয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে ফুসফুস এবং হৃৎপিণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় প্রাণে বেঁচে ছিলেন ওই তরুণী।

যদিও দুর্ঘটনার প্রভাব এতটাই ছিল যে শিরদাঁড়া এবং লিভার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিরদাঁড়া ফুটো হয়ে যায়। পেট এবং বুকের মধ্যেখানের মাংসপেশীও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোগী সোজা হয়ে শুতেই পারছিলেন না। ফলে তাঁকে উপুড় করে শুইয়েই অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপচার শুরু করা যায়নি। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর তরুণীর পরিবারের সদস্যরা রক্ত জোগাড় করে আনলে সোমবার রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ শুরু হয় অস্ত্রোপচার। শেষ হয় মঙ্গলবার ভোরে।

আরও পড়ুন: চিনারপার্কের হোটেলে দু’দিন, শহরে কি জাল বিছিয়েছিল গ্যাংস্টার ভুল্লাররা? চাঞ্চল্যকর তথ্য তদন্তে

আপাতত ওই তরুণী বিপদমুক্ত। কিন্তু যেভাবে তাঁর শিরদাঁড়া ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে, তাতে আগামী দিনে রোগীকে নিয়ে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানাচ্ছে চিকিৎসকরা। রোগীর শরীরের নীচের অংশে আপাতত কোনও সাড়া নেই। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে তাঁর শরীরের নীচের অংশ অসাড় হয়ে যেতে পারে। সংক্রমণের সম্ভাবনাও রয়েছে। যদিও আপাতত ওই তরুণীর প্রাণ সংশয় নেই বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তরুণীর পরিবারও।

আরও পড়ুন: অক্সিজেন ব্যবহারে বিরাট গাফিলতির কারণেই কি মৃত্যু বেশি বঙ্গে? হাড় হিম করা রিপোর্ট স্বাস্থ্যভবনে

Next Article