কলকাতা: পুজো মিটতেই তত্পর কেন্দ্রীয় এজেন্সি। রাজ্য জুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক- তাঁর আপ্ত সহায়কের বাড়ি সহ মোট ১২টি জায়গায় বৃহস্পতিবার একযোগে তল্লাশি চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই রেশন দুর্নীতিতে চাঁই বাকিবুর রহমান ইডি-র জালে। তাঁকে জেরা করে একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, ইডি জানতে পেরেছে, বছর তিনেক আগেই রেশন দুর্নীতির বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিল রাজ্য পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ২০২০, ২০২১, ২০২২ সালে নদিয়া জেলায় অভিযোগ ওঠে রেশনের পণ্য খোলা বাজারে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এই নিয়ে তিনটি অভিযোগ দায়ের হয় কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায়। মামলার ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। নদিয়ার কয়েকটি রাইসমিলে সে সময়ে তল্লাশি চালানো হয়। কয়েকজন ডিলারের নামও ওঠে আসে। তল্লাশি চলেছিল তাঁদের গোডাউনেও। দেখা যায়, গোডাউনে কেজি কেজি আটা মজুত করা আছে। উঠে আসে বাকিবুর রহমানের নাম। জানা যায়, বাকিবুরের রাইসমিলেই তা তৈরি হয়েছিল। ওই গোডাউনগুলিতে সরকারি স্ট্যাম্প দেওয়া আটা বাজারে বিক্রির অভিযোগ ওঠে।
পুলিশ আটা বাজেয়াপ্ত করেছিল বটে, কিন্তু সে সময়ে আর কোনও গোডাউন মালিক কিংবা রাইস মিলের মালিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি। সূত্রের খবর, পুলিশের এই তদন্ত প্রক্রিয়ার গোটা বিষয়টি ইডি আদালতে রিপোর্ট আকারে জানিয়েছে। কিন্তু কেন পুলিশ তদন্ত এগল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তদন্ত চললে তিন বছর আগেই বাকিবুরের কীর্তি প্রকাশ্যে আসত। এত বড় কেসে পুলিশি ‘নিষ্ক্রিয়তার’ পিছনেও কী কোনও প্রভাবশালী যোগ রয়েছে? সেটাও বর্তমানে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এদিকে, বাকিবুর রহমানের আরও সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। বারাসত পুরসভার শিশির কুঞ্জ আবাসনে দু’টো ফ্ল্যাট রয়েছে বাকিবুর রহমানের। ২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সপরিবারে এই ফ্ল্যাটে থাকতেন বাকিবুর। পরবর্তীতে তার পরিবার এখান থেকে চলে যায়। পরে ওই ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন এক আত্মীয়।অন্য ফ্ল্যাটটিতে মাঝেমধ্যে এসে থাকতেন বাকিবুর নিজেই। বাকিবুরের এই জাল কত দূর বিস্তৃত, সেটা গোটাতে চাইছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।