কলকাতা : একবার বলা হয়েছে চাকরি হবে না, আবার পরে বলা হয়েছে চাকরি হবে কি হবে না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর এ ভাবেই ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে একজন গবেষকের চাকরি। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। সেই মামলায় ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইন্সটিটিউটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য। এমনকি এই অভিযোগে আইএসআই-কে জরিমানা দিতে হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ দিন বিচারপতি ভর্ৎসনার সুরে বলেছেন, ‘একজন গবেষক চাকরি পেয়েছেন কি না সেটা জানতে চার বছর লেগে গেল!’ আইএসআই-এর ডিরেক্টর উপস্থিত থাকলেও সদুত্তর না দিতে পারায় আইএসআই-কে জরিমানা দিতে হতে পারে। আদালতের তরফে বলা হয়েছে, ‘আদালতের নির্দেশ আইএসআই-এর মত প্রতিষ্ঠান মানছে না, এটা খুব দুর্ভাগ্যের।’ বুধবার ওই মামলার শুনানিতে এমনই মন্তব্য করেছেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য।
নীলাব্জ শিকদার নামে এক গবেষক এই মামলা করেছিলেন। স্কলারশিপ নিয়ে আইএসআই থেকেই পিএইচডি করছেন ওই গবেষক। ২০১৮ সালে আইএসআই-এর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে স্থায়ী চাকরির জন্য আবেদন করেন নীলাব্জ শিকদার। তবে চার বছর কেটে যাওয়ার পরও তাঁর চাকরির আবেদন কী অবস্থায় আছে, তা জানার জন্য আরটিআই-ও করেন তিনি। চলতি মাসেই তাঁর সেই প্রজেক্ট শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ চাকরি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে এখনও।
প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর না পেয়ে আদালতের দারস্থ হন রামানুজন পুরস্কার প্রাপ্ত নীলাব্জ শিকদার। আইএসআই-এর তরফে গত বছরের ডিসেম্বরে জানানো হয়েছিল, নীলাব্জ যোগ্য নন প্রার্থী হিসেবে। পরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে জানানো হয়, এখনও নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। তাই চাকরি হয়েছে কি না, তা জানানো সম্ভব হয়নি।
এই মামলায় গত জানুয়ারিতে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, ওই প্রার্থীর আবেদনের ভবিষ্যত জানাক কর্তপক্ষ। কিন্তু তারপরেও নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় আইএসআই-এর ডিরেক্টর ও লিগ্যাল সেলের আধিকারিককে আদালতে স্বশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। বুধবারই তাঁরা হাজির হন।
আইএসআই-এর তরফে আদালতে জানানো হয়, ডিসেম্বরে ওই প্রার্থীর তথ্য দেখে বলা হয়েছিল, তিনি ওই পদের যোগ্য নন। যদিও চূড়ান্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে হয়েছে এই ফেব্রুয়ারিতে। তাই তাঁকে এখনও বাতিল বলা যাবে না। এই জবাবে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি। রীতিমতো বিষ্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘চার বছর ধরে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া কীভাবে চলতে পারে? কোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করায় আইএসআই-এর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা আইএসআই জানাক।’ নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য সময় চেয়ে নিয়েছে আইএসআই। আগামী শুনানি ১০ জুন।