কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিল ইডি। অবশেষে বুধবার কাকুকে বাগে পেয়েছেন ইডি অফিসাররা। এসএসকেএম থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জোকা ইএসআই হাসপাতালে। সেখানে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এরপর পরীক্ষা করে দেখা হবে সেই কণ্ঠস্বর। কালীঘাটের কাকুর ভয়েস স্যাম্পেল পেয়ে গেলেই কি কেল্লাফতে ইডির? সায়েন্টেফিক্যালি কতটা গ্রহণযোগ্য এই ভয়েস স্যাম্পেল টেস্ট? এই প্রশ্ন নিশ্চয়ই আপনার মনেও জাগছে। টিভি নাইন বাংলায় এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল বিশিষ্ট চিকিৎসক শারদ্বত মুখোপাধ্যায়কে।
চিকিৎসক শারদ্বত মুখোপাধ্যায়ের মতে, এই ভয়েস স্যাম্পেল টেস্ট একদম সায়েন্টেফিক। কোনও ব্যক্তিকে শনাক্ত করার জন্য কিছু নথিভুক্ত প্রক্রিয়া রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে জেনেটিক স্যাম্পেলিং বা ডিএনএ স্যাম্পেলিং, রেটিনাল ম্যাপিং কিংবা আঙুলের ছাপ। সেরকমই একটি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া হল ভয়েস স্য়াম্পেল পরীক্ষা। তাঁর কথায়, ভয়েস স্যাম্পেল কোনও ব্যক্তিকে শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে প্রায় ১০০ শতাংশ বিশ্বাসযোগ্য নথি।
কোনও মানুষকে চিনতে বা শনাক্ত করতে তাঁর কণ্ঠস্বর কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ভীষণ সহজ-সরল ভাষায় এদিন বুঝিয়ে দেন চিকিৎসক শারদ্বত মুখোপাধ্যায়। বললেন, ছোটবেলায় যখন কাউকে তাঁর মা বকা দেন, তখন মায়ের গলার আওয়াজ পেয়েই সকলে সতর্ক হয়ে যায়। তার জন্য আলাদা করে মায়ের মুখ দেখার দরকার হয় না। আবার ফোনে যখন কথা হয়, তখন শুধু গলা শুনেই বলে দেওয়া যায় উল্টোদিকে কে কথা বলছেন। ঘরের বাইরে থেকে কেউ ডাকলে, তাঁর মুখ না দেখেই বলে দেওয়া যায় ঘরের বাইরে কে দাঁড়িয়ে আছেন।
কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই তো আবার একজনের গলা প্রায় হুবহু নকল করতেও দেখা যায় অন্যজনকে। এই যেমন সঙ্গীত জগতে কিছু প্রচলিত শব্দবন্ধ রয়েছে… লতা-কণ্ঠী বা কিশোর-কণ্ঠী। কিংবা ধরুন, যাঁরা মিমিক্রি করেন… তাঁরাও তো অনেকক্ষেত্রেই বিভিন্ন অভিনেতার চালচলন থেকে শুরু করে কণ্ঠস্বর পর্যন্ত কপি করে ফেলেন। তবে চিকিৎসক শারদ্বত মুখোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, আপাতভাবে হুবহু মনে হলেও, যদি ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করা হলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ওই লতা-কণ্ঠী আসলে লতা মঙ্গেশকর নন।