কলকাতা: প্রায় সাড়ে চার মাস পর অবশেষে এসএসকেএম হাসপাতালের বাইরে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’। গত ২২ অগস্ট এসএসকেএম হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হন সুজয় ভদ্র। কার্ডিওলজি ব্লকের তিন তলায় একটি এসি কেবিনে ভর্তি ছিলেন তিনি। সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টানাপড়েন চলে আসছিল। এর আগে একবার নমুনা নিতে গিয়ে শেষবেলায় এমএসভিপি-র বাধার মুখে পড়েছিল ইডি। সেই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বরের শুরুতে জোকা ইএসআই হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স গিয়েও ফিরে এসেছিল। এরপর আজ রাতে শেষ পর্যন্ত জোকা ইএসআই হাসপাতালে কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সুজয় ভদ্রকে।
কিন্তু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ কেন জরুরি? উত্তর খুঁজতে পিছিয়ে যেতে হবে একটু পিছনের দিকে। যেদিন প্রথম সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি, সেই দিনই তদন্তকারী সংস্থার অপর একটি টিম হানা দিয়েছিল রাহুল বেরার বাড়িতে। এই রাহুল বেরা হলেন একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। বিষ্ণুপুর থানায় কাজ করেন। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাঁর। সেদিনের অভিযানে রাহুল বেরার ফোন বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের দাবি, রাহুল বেরা নামে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে একজনের টেলিফোনিক কথোপকথনের একটি ফাইল ইডির হাতে এসেছিল। ওই ব্যক্তি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র বলে দাবি ইডির। ইডির দাবি, অডিও ক্লিপিংয়ে শোনা যাচ্ছে, রাহুলকে বলা হচ্ছে, মোবাইলে থাকা নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য মুছে ফেলো। জানা যাচ্ছে, এটা যে ‘কাকু’রই গলা, তা আদালতে প্রমাণ করতেই কণ্ঠস্বরের নমুনা নিতে চাইছে ইডি।
প্রসঙ্গত, কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ ঘিরে বিগত দিনগুলিতে চূড়ান্ত নাটকীয়তা দেখা গিয়েছে। ডিসেম্বরের শুরুতে জোকা থেকে অ্যাম্বুলেন্স গিয়েও ফিরে এসেছিল। এরপর গত ৭ ডিসেম্বর রাতে হঠাত্ আইসিসিইউয়ে স্থানান্তর করা হয়েছিল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে। সেই সময় শিশুদের জন্য বরাদ্দ আইসিসিইউ বেডে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ১২ ডিসেম্বর রাতে এসএসকেএম হাসপাতালের কার্ডিওলজি কেবিনে ফের স্থানান্তর করা হয় তাঁকে। গতকাল, ২ জানুয়ারি কণ্ঠস্বরের নমুনার উপর ফের জোর দেয় আদালত। এরপরই বুধবার সন্ধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বের করা হল কালীঘাটের কাকুকে। অ্যাম্বুল্যান্সে করে জোকা ইএসআই-এ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।