কলকাতা: নিয়োগের নামে যে কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে, তার তল খুঁজে পেতে মরিয়া গোয়েন্দারা। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা গ্রেফতার হওয়ার পরও সবটা পরিষ্কার হয়নি। হুগলির তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে সামনে আসছে আরও একাধিক নাম। কুন্তলের মুখেই শোনা গিয়েছিল গোপাল দলপতির (Gopal Dalapati) নাম। পরে ডিএলএড কলেজগুলির সংগঠনের সভাপতি তাপস মণ্ডলের মুখেও শোনা গিয়েছে সেই নাম। অবশেষে ধরা দিয়েছেন সেই গোপাল দলপতি। তিনি সত্যিই সব জানেন কি না, তা জানতে মঙ্গলবার ইডি দফতরে তাপস মণ্ডল ও গোপাল দলপতিকে ম্যারাথন জেরা করা হয়। একটানা ১২ ঘণ্টা জেরা করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। আগামী সাত দিনের মধ্যে আয়-ব্যয় এবং সমস্ত সম্পত্তির নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, গভীর রাত্রিবেলা ইডি অফিস থেকে বের হন গোপাল। বেরনোর সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, যতবার তাঁকে ডাকা হবে ততবার তিনি সহায়তা করবেন। যদিও কুন্তলকে চিনতে অস্বীকার করে গোপাল বলেন, “তদন্তে সাহায্য করছি। যা জিজ্ঞেস করা হয়েছে তার উত্তর দিয়েছি। পরবর্তীতে প্রয়োজন পড়লে আবারও আসব।” তিনি বলেন, “কুন্তলের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ও ওর বক্তব্য পেশ করেছে আমি আমারটা। কুন্তল বা শান্তনুর সঙ্গে কোনও রকমের চুক্তি ছিল না। কুন্তলের থেকে কোনও টাকা পেতাম না।”
এর আগে কুন্তল ঘোষ অভিযোগ করে বলেছিলেন, গোপাল দলপতি ১৫ কোটি টাকা নিয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও এসডির কাছ থেকে। সেখানে টাকার লেনদেন হয়েছে। এই প্রসঙ্গে উত্তর দিতে গিয়ে গোপাল জানিয়েছেন যে, তিনি কিছু জানেন না। এমনকী কোনও ওএসডিকে-ও চেনেন না। শুধু তাই নয়। কুন্তল ঘোষকেও চিনতে অস্বীকার করে গোপাল বলেন, “কুন্তলকে আমি চিনতাম না, তাপসদাই চিনিয়েছিল।”
এ দিকে, গোপাল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে তাপস মণ্ডল বলেন, “গোপালের সঙ্গে আমার দীর্ঘ চার বছর পর দেখা। ও যে বাইরে আছে সেটাও আমি জানতাম না।” তারপরই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, “ওর একটা অর্থলগ্নি সংস্থা ছিল। এরপর গ্রেফতার হয়ে তিহার জেলে চলে যায়। পরবর্তীকালে অফিসারাই আমায় জানান যে গোপাল বাইরে আছে।আপনি খোঁজ করুন।” একই সঙ্গে তাপস বলেন, “গোপাল আমার গ্রামের ছেলে। ২৮ জানুয়ারি আমি গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম মেদিনীপুরে, আমি ওর খোঁজ করে নিয়ে এসেছি। গোপালকে কুন্তলের সঙ্গে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।”