কলকাতা : তাপস মণ্ডল (Tapas Mondal) বলছেন, কুন্তল ঘোষ সব জানেন। আবার কুন্তল ঘোষ বলেছেন, গোপাল দলপতি সব জানেন। নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) সেই গোলকধাঁধার মধ্যে এবার আরও এক নতুন নাম সামনে আনলেন সদ্য সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হওয়া তাপস মণ্ডল। গোপাল দলপতি যে ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা বলেছিলেন, তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে জল্পনা তুঙ্গে। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে কেই এই ‘কালীঘাটের কাকু’? মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের তরফে সেই প্রশ্ন করা হতেই তাপস মণ্ডল বললেন, ‘কালীঘাটের কাকু’র নাম সুজয় ভদ্র।
এর আগেও তাপস মণ্ডল নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অনেকের নাম সামনে এনেছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়েছিল হুগলির তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে। কুন্তল ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পর বলেছিলেন, গোপাল দলপতি সব জানেন। সেই গোপালই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন এই কাকুর কথা। কুন্তলের সঙ্গে নাকি যাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর গাড়িতে ওঠার সময়ই প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। কালীঘাটের কাকু কে? হেসে উত্তর দেন তাপস, ‘সেটা কুন্তল বলবে’। আপনি জানেন না? ‘নামটা জানি, নামটা বলেছে.. কী যেন সুজয় ভদ্র নাকি’। কে সুজয় ভদ্র? হাত নেড়ে তাপসের জবাব, ‘আমি চিনি না, চিনি না।’
জেরায় উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, হুগলির আর এক তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এই সুজয় ভদ্রের। চাকরি দেওয়ার গ্যারান্টি আছে কি না, সে ব্যাপারে কুন্তলকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তাপস। সেই সময় শান্তনু ও সুজয় নাকি তাপস মণ্ডলকে আশ্বস্ত করেছিলেন। সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার কোনও এক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল শান্তনু ও সুজয়ের। তাঁরা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
এই কাকু প্রসঙ্গে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘একেক সময় একেক জনের নাম বলা হচ্ছে। সিবিআই ওদের এত সময় দিচ্ছে, আলোচনা করে নাম বদলানোও হতে পারে।’ তাঁর অভিযোগ, সিবিআই এত ধীরে তদন্ত করছে, তাতে অনেক তথ্য প্রমাণ বদলে যেতে পারে।
এই কাকুর খবর শুনে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘তাপস মণ্ডলের বিষয়টা রহস্যজনক। তাঁকে প্রথম থেকে কিংপিন বলা হচ্ছে অথচ তাঁকে ছেড়ে রাখা হয়েছিল। তিনি শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধে কুৎসা করে বেড়াচ্ছিলেন। বিচারপতিরাও বিস্মিত হয়ে যাচ্ছিলেন। আদালতের চাপে তাপসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাঁকে কুৎসা করার জন্য ছেড়ে রাখা হয়েছিল, তিনি কী বললেন, সে ব্যাপারে মন্তব্য করব না।’