কলকাতা: বাংলায় রাজ্যপাল হিসাবে সিভি আনন্দ (Governor CV Anand Bose) বোস দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকে একাধিকবার তাঁর সঙ্গে বিজেপির মতানৈক্য দেখা গিয়েছে। সরকারের প্রতি বা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি রাজ্যপালের একাধিক প্রশংসামূলক বক্তব্যকে ‘না পসন্দ’ বলেছে বিজেপি। এরইমধ্যে বুধবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন আরও বড় বিতর্ক দানা বাঁধে। অধিবেশন কক্ষে রাজ্যপাল যখন বাজেট ভাষণ পড়ছেন, রাজ্য সরকারের প্রশংসাসূচক অনুচ্ছেদ পাঠের সময় তুমুল হইচই করে বিজেপি। যদিও এই হইচই রাজ্যপালকে বক্তব্য পাঠ থেকে প্রতিহত করতে পারেনি। তিনি সম্পূর্ণ ভাষণ পাঠ করেই কক্ষ ছাড়েন। সূত্রের খবর, এর আগে মঙ্গলবার রাজভবনে বিরোধী দলনেতা-সহ বিজেপি বিধায়কদের একাংশকে ডাকা হয়েছিল। তবে তাতে সাড়া দেয়নি বিজেপি। রাজ্যপালের আমন্ত্রণের পরও সেখানে যায়নি তাঁরা। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, রাজ্যপালের বিভিন্ন বক্তব্যকে নিয়ে গত কয়েকদিনে বিজেপি নেতারা যেভাবে বলছেন, তাতে সংঘাতের একটা আবহ স্পষ্ট। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা এখনই রাজ্যপালের মূল্যায়ণে যাচ্ছেন না। আপাতত রাজ্যপালের ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, রাজ্যপালকে ভুল বোঝাচ্ছে রাজ্য। বুধবারও এ কথাই শোনা গিয়েছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মুখ থেকে।
সূত্রের খবর, শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির এক ঝাঁক বিধায়ককে গত মঙ্গলবার রাজভবনে ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু তাঁরা সে ডাকে সাড়া দেননি। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের দাবি, রাজ্যপাল তাঁদের সঙ্গে কথা বলার আগেই তাঁর যে বাজেট ভাষণ তা অনুমোদন করে দিয়েছিলেন। ফলে বিজেপি বিধায়করা আলাদা করে গেলেও খুব লাভ কিছু হতো না। তাই তাঁরা যাননি। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে, এভাবে বিজেপি ও রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাতের আবহ তৈরি হচ্ছে।
এমনও সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার রাজভবনে না যাওয়ার বিষয়টি বিজেপির পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক নেতৃত্বকেও জানানো হয়েছে। বুধবার বাজেট অধিবেশনের শুরুর দিন রীতি মেনেই রাজ্যপাল ভাষণ পাঠ করেন। আর সেই ভাষণে রাজ্যের বিভিন্ন প্রশংসার কথা উঠে আসতেই ফুঁসে ওঠেন বিজেপি বিধায়করা।
বিধানসভা কক্ষে ‘শেম, শেম’ ধ্বনিও ওঠে। যদিও পরে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, এই ধ্বনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তারা দিয়েছে। তবে বাজেট অধিবেশনের প্রথমদিনে যে ছবি বিধানসভায় দেখা গিয়েছে, তা যে খুব একটা মধুর নয়,তেমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। এমনও শোনা যাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারীরা বুধবারের ভাষণ নিয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দিতে চলেছেন। রাজ্যপালের ভাষণের কোনটা কোনটা ঠিক আর কোনটা কোনটা ভুল তা চিঠি দিয়ে জানাবেন শুভেন্দু অধিকারীরা।