কলকাতা: সম্প্রতি বিধানসভার করিডরে ইন্দ্রনীল সেন ও বাবুল সুপ্রিয়র তরজা, পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবুলের ইঙ্গিতবাহী পোস্ট। জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল, এবার কি তবে বাবুলের দফতরে কোপ পড়তে চলেছে? সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার রদবদলে সে জল্পনাতেই পড়ল সিলমোহর। যে পর্যটন দফতর ঘিরে ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে সম্প্রতি বাবুলের ‘তর্কাতর্কি’র অভিযোগ উঠেছিল, এবার সেই পর্যটন দফতরই খোয়ালেন বাবুল। আর আরও তাৎপর্যপূর্ণ, সে দফতর গেল ইন্দ্রনীল সেনের হাতেই। পর্যটন দফতরের বদলে বাবুল সুপ্রিয়কে দেওয়া হয়েছে অচিরাচরিত শক্তি দফতরের দায়িত্ব। সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর আগেই ছিল।
যদিও দফতর বদলে হতোদ্যম নন বলেই দাবি বাবুলের। বরং তিনি বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে খোলা মনে কথা বলতে পারেন। এটাই অনেক বড় পাওনা। বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “যে দলের সুপ্রিমোর সঙ্গে সরাসরি মনের কথা বলা যায়, সে দলে তাঁর নির্দেশে যে কোনও দায়িত্বই ভালভাবে পালন করা যায়। তাছাড়া আমি পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের দায়িত্বে ছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা আমি এখানে কাজে লাগাতে পারব। সঙ্গে আইটির দায়িত্ব আমাকে দেওয়াই আছে।”
অন্যদিকে এক সময় যে পর্যটন দফতরের মন্ত্রিত্ব সামলেছেন ইন্দ্রনীল, আবারও তা ফিরে পেয়ে খুশি তিনি। যদিও আবেগকে মুঠোয় রেখেই ইন্দ্রনীল বলেন, “দফতর তো কারও কাছেই স্থায়ীভাবে থাকে না। যাকে যেখানে প্রয়োজন, সময় অনুযায়ী আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করেন। আমি আমার সেরাটাই দেব।”
এক সময় এই ইন্দ্রনীলের হাত থেকেই পর্যটন দফতর নিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান পদে বসানো হয় ইন্দ্রনীলকে। ওয়াকিবহাল মহলের মত, দফতর ও নিগমের মধ্যে তালমেল রেখে কাজ না হলে, ফল উল্টোই হয়। কাজে অনেক খামতি থেকে যায়।
সম্প্রতি বিধানসভায় ইন্দ্রনীল সেন ও বাবুল সুপ্রিয়র মধ্যে এই দফতরের কাজ নিয়ে তর্কাতর্কি হয় প্রকাশ্যেই। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের সামনে হাঁটার সময়ই এই বিতণ্ডা বাধে। বাবুল কার্যত মেজাজ হারিয়েই ইন্দ্রনীলকে বলেন, ‘তুমি কাজ আটকে দিচ্ছ কেন?’ পাল্টা দিদিকে বলার কথা বলেন ইন্দ্রনীল। বাবুলও বলেন, সবটাই জানাচ্ছেন।
বোঝাই গিয়েছিল, পর্যটন দফতরের কাজ নিয়েই তাল কাটছে দুই গায়কের সম্পর্কের। বাবুলকে সরিয়ে এদিন ইন্দ্রনীলকে দায়িত্ব দিতেই প্রশ্ন উঠল, সেই ঝামেলার কারণেই কি সরতে হল বাবুলকে? বাবুলের বলেন, “আমি পুরনো কথা কিছু বলতে চাই না। শুধু বলব, পর্যটন দফতরে আমার যা কাজ সেটা আমি করেছি।” আর ইন্দ্রনীলের বক্তব্য, “বলতে পারব না। এটা উনি বলতে পারবেন আর প্রশাসন বলতে পারবে।”