Retired Justice Ganguly: ‘আইন মেনে না হলে চাকরি যাবেই’, মমতার মন্তব্যে জবাব অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

TV9 Bangla Digital | Edited By: Sukla Bhattacharjee

Mar 15, 2023 | 11:48 AM

পদ্ধতিগত ত্রুটি আর বেআইনিভাবে নিয়োগ সম্পূর্ণ আলাদা বলে স্পষ্ট করে দেন প্রাক্তন বিচারপতি।

Retired Justice Ganguly: আইন মেনে না হলে চাকরি যাবেই, মমতার মন্তব্যে জবাব অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়।

Follow Us

কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যে কয়েক হাজার ছেলে-মেয়ের চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই চাকরি বাতিলের বিরোধিতা করে মঙ্গলবার আলিপুর জাজেস কোর্টে দাঁড়িয়ে কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের (Retired Justice Ashok Ganguly) একটি পুরোনো পর্যবেক্ষণের কথাই তুলে ধরেন। বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম তুলে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “একটি রায় দেখেছিলাম, চাকরি নিয়ে- একটি মামলায় উনি বলেছিলেন, সংশোধন করে নাও, যদি ভুল থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে TV9 বাংলা-কে প্রতিক্রিয়া জানালেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়।

২০০৬ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে ছিলেন অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় তাঁর এজলাসে নিয়োগ-দুর্নীতি বা চাকরি বাতিল সংক্রান্ত এরকম কোনও মামলা হয়েছে কি না বা তিনি বিশেষ কোনও রায় দিয়েছেন কি না, তা এত বছর পর আর মনে করতে পারছেন না বর্ষীয়ান প্রাক্তন বিচারপতি। তবে পদ্ধতিগত ত্রুটি আর বেআইনিভাবে নিয়োগ সম্পূর্ণ আলাদা বলে স্পষ্ট করে দেন তিনি। এপ্রসঙ্গে বিহারের একটি মামলার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন প্রাক্তন বিচারপতি।

ঠিক কী বললেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়?
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্টত বলেন, “এখন যে ধরনের নিয়োগ দুর্নীতি পশ্চিমবঙ্গে চলছে, সেরকম দুর্নীতি আগে মানুষ দেখেনি। ফলে মনে পড়ছে না, এরকম কোনও মামলা হয়ছে কি না, যার প্রেক্ষিতে এমন রায় দিয়েছি। তবে এটা হতে পারে, কোনও নিয়োগে কোনও পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল। আমি বলেছিলাম, ত্রুটিটা সংশোধন করে নাও। যাতে চাকরি না যায়। রোজ চাকরি গেলে তো মানুষ বিপদে পড়ে।”

পদ্ধতিগত ত্রুটি আর বেআইনি নিয়োগ- দুটো আলাদা বলেও এদিন স্পষ্ট করে দেন প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “যাঁরা চাকরি পেয়েছেন অথচ আইনি কোনও পদ্ধতি মানা হয়নি, সেখানে তো চাকরি যাবেই।” এপ্রসঙ্গে বিহারের এক নিয়োগ-দুর্নীতির উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি। অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমি এটা বিহারে করেছিলাম। ১৯৯৮-৯৯ সালে পাটনা হাইকোর্টে আমি বিচারপতি থাকাকালীন সময়ে তৎকালীন স্পিকার গোলাম সরওয়া ২৫০-৩০০ জনকে এভাবে কোনও নিয়ম মেনে চাকরি দিয়েছিলেন। সেই মামলা আমার কাছে এসেছিল। আমি বলেছিলাম, এদের চাকরিতে কোনও আইনি অধিকার নেই। এর শুনানির দরকার নেই। এদের চাকরি যাওয়া উচিত। তারপর তাদের চাকরি বাতিল হয়েছিল।” তবে তখনকার রিপোর্টের ভিত্তিতে সেই রায় দেওয়া হয়েছিল বলেও স্পষ্ট করে দেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি SSC-র নিয়োগ-দুর্নীতি প্রকট হয়ে উঠেছে। বেআইনিভাবে নিয়োগ হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কয়েক হাজার ছেলে-মেয়ের চাকরি বাতিল হয়েছে। এদিন সেই রায়ের তীব্র বিরোধিতা শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন, “আমি যদি অন্যায় করি, আপনারা আমার গালে দুটো চড় মারলেও কিছু মনে করব না। আমি জীবনে কখনও অন্যায় করিনি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর একটা সিপিএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তাহলে তোমরা কেন খাচ্ছ? দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কাড়বার ক্ষমতা আছে।” এপ্রসঙ্গেই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম তুলে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “একটি রায় দেখেছিলাম, চাকরি নিয়ে- একটি মামলায় উনি বলেছিলেন, সংশোধন করে নাও, যদি ভুল থাকে। চাকরি খাওয়ার কথা বলেননি। আর এখন রোজ কথায়-কথায় ৩-৪ হাজার চাকরি বাদ।” এরপর বিষয়টি ভেবে দেখারও আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Next Article