নয়া দিল্লি: ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার মতো ঘটনায় নির্যাতিতা বা তাঁর পরিবারকে সমাজে অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ্যে এসে গেলে প্রভাব পড়তে পারে বিচার ও তদন্তের ক্ষেত্রে। তাই নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনা যায় না। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে। পাশাপাশি, ভারতীয় আইনেও বাধ্যবাধকতা আছে। নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় উঠেছে খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ। সোমবার সেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কমপক্ষে চার বার নাম উল্লেখ করেছেন মৃত চিকিৎসকের। আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানিয়েছেন, ‘এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
নির্যাতিতার নাম প্রকাশ হলে ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি’ অনুযায়ী কী শাস্তির বিধান আছে?
ভারতীয় দণ্ডবিধি বা ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (IPC)-এর ২২৮এ ধারায় আছে এই সম্পর্কিত বিধান। সেই ধারা অনুযায়ী, ধর্ষিতা বা যৌন হেনস্থার শিকার নির্যাতিতার নাম, পরিচয় প্রকাশ্য়ে আনলে ২ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। ধার্য করা হতে পারে জরিমানাও।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় কী বলা আছে?
বর্তমানে ভারতীয় দণ্ডবিধির বদলে আনা হয়েছে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’। সেখানেও এই সম্পর্কিত শাস্তির কথা বলা আছে। ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’র ৭২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনেন, তাহলে জেল হতে পারে। জেলের মেয়াদ হতে পারে ২ বছর পর্যন্ত। এছাড়া ধার্য করা হতে পারে জরিমানা।
এই বিষয়ে কী নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের?
কোনও ব্যক্তি সংবাদ মাধ্যমে (ইলেকট্রনিক বা প্রিন্ট মিডিয়া) বা সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্যাতিতার নাম প্রকাশ করতে পারবেন না। পরোক্ষভাবেও না। যা কিছু প্রকাশ হলে নির্যাতিতাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে, তা প্রকাশ করা যাবে না।
যদি নির্যাতিতার মৃত্যু হয়, বা অচৈতন্য অবস্থায় থাকেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর কোনও আত্মীয় অনুমতি দিলেও নাম প্রকাশ করা যাবে না। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী, নাম প্রকাশ করতে হলে সেই সিদ্ধান্ত নেবে সেশন জাজ।
যে সব নথিতে নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আসতে পারে, সেগুলি মুখবন্ধ খামেই আদান-প্রদান করতে হয় পুলিশকে। নাম গোপন রাখতে হয় আদালত ও তদন্তকারী সংস্থাকেও। নির্যাতিতা মৃত্যু হলে বা অচৈতন্য থাকলে, তাঁর আত্মীয় যদি নাম প্রকাশ করতে চান, তাহলে শুধুমাত্র সেশন কোর্টেই আবেদন জানাতে পারেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইনে আরও বলা আছে, নির্যাতিতা অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে, তার পরিচয় যদি প্রকাশ করার প্রয়োজন পড়ে, সে ক্ষেত্রে বিশেষ আদালত অনুমোদন দিতে পারে।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)