কলকাতা: গড়িহাটের বাজার হোক বা শহর-শহরতলির নামজাদা শপিং মল, পোশাকের দোকান, বিগত কয়েক বছরে যেন ঝড় তুলেছে Ripped ফ্যাশন। বর্তমান প্রজন্মের পছন্দ তালিকায় সর্বদাই শীর্ষে রয়েছে রিপড জিনস বা এই ছেঁড়া জিন্স। এই ছেঁড়া জিন্স পরে কলেজে ঢোকা যাবে না। এমনটাই বলছে এজেসি বোস কলেজ (AJC Bose College)। ১ বছর আগে এই নোটিস দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। TV9 বাংলা খবর করার পরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল শিক্ষামহলে। এবার ভর্তির জন্যও দিতে হচ্ছে মুচলেকা। লিখে দিতে হচ্ছে ছেঁড়া জিন্স পরে আসব না।
কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ১ বছর আগে নোটিস দিলেও এ বিষয়ে খুব একটা কর্ণপাত করেননি একাংশের পড়ুয়া। কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ছেঁড়া জিন্স পরেই কলেজ আসতে থাকেন। সে কারণেই এবার ভর্তির সময় মুচলেকার সিদ্ধান্ত।
প্রসঙ্গত, সিংহভাগ বেসরকারি কলেজগুলির ক্ষেত্রে রয়েছে ইউনিফর্ম। কিন্তু, সরকারি কলেজগুলির ক্ষেত্রে কোনও ইউনিফর্মের বিষয় নেই। তাই সেখানে কে কী পরে আসবেন সেটা সম্পূর্ণ ছাত্রের নিজস্ব পছন্দের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু, এজেসি বোস কলেজ কর্তৃপক্ষ ১ বছর আগে একটা নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন কলেজের গেটে। সেখানে সাফ বলা হয়েছিল কলেজে আর কোনও ছেঁড়া জিন্স পরে আসা যাবে না। যা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক তৈরি হয়েছিল সেই সময়। অনেক পড়ুয়াই প্রশ্ন করেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে। সাফ বলেছিলেন কলেজ তাঁদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত পড়ুয়াদের জীবনশৈলীর উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এরপর কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। এরমধ্যে এবার মুচলেকা লিখিয়ে পড়ুয়াদের ভর্তি করা হচ্ছে কলেজে। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে নয়া বিতর্ক।
যদিও বিতর্কের মধ্যে কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণ চন্দ্র মাইতি বলছেন, ৯৯ শতাংশ পড়ুয়া এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল। কিন্তু ১ শতাংশ পড়ুয়া মেনে নিচ্ছিল না। সে কারণেই ওই ১ শতাংশকে নিয়ে ১০০ শতাংশে রূপান্তরিত করতেই এই মুচলেকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলছেন, “কলেজ হচ্ছে বিদ্যালয়। এখানে সরস্বতীর আরাধনা হয়। এখানে শুদ্ধ বস্ত্রে, শুদ্ধ চিত্তে আসাটাই ভাল। কলেজের ক্ষেত্রে যেটা শালীন সেটা নিশ্চয় কলেজের বাইরে হবে না। ঠিক যেমনভাবে ছেঁড়া জিনস পরে পুজোর অনুষ্ঠানে যাওয়া যায় না, তেমনই কলেজেও আসা যায় না। কলেজ তো আর ফ্যাশান শোয়ের জায়গা নয়। তাই বাইরে তুমি যা ইচ্ছা পরে যাও, কেউ কিছু বলবে না। কলেজে শুদ্ধ চিত্তে এসো।”