TMCP-র প্রতিষ্ঠা দিবসে কেন পরীক্ষা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে? তৃণাঙ্কুরের প্রশ্নে জবাব উপাচার্যের

TMCP: পরীক্ষার সূচি যে বদলানো হবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। তিনি বলেন, "আজ থেকে প্রায় ৩ মাস আগে বৈঠক করে এই পরীক্ষার দিন স্থির হয়েছে। অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারের ভিত্তিতে পরীক্ষার সূচি হয়। সরকারি ছুটিগুলো বাদ দেওয়া হয়। যদি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা দিবস মানতে হয়, তাহলে যতগুলো রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাদের সবার প্রতিষ্ঠা দিবস মানতে হবে।"

TMCP-র প্রতিষ্ঠা দিবসে কেন পরীক্ষা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে? তৃণাঙ্কুরের প্রশ্নে জবাব উপাচার্যের
TMCP রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যকে জবাব দিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্তImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Jul 26, 2025 | 8:39 PM

কলকাতা: আগামী ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। প্রতি বছর ধর্মতলার মেয়ো রোডে সমাবেশ হয়। এবছর তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা রয়েছে। বি.কমের চতুর্থ সেমেস্টার এবং বিএ এলএলবি-র চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা রয়েছে। এই নিয়ে সরব হলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্তকে আক্রমণ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন তিনি। তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানিয়ে দিয়েছেন, সিদ্ধান্ত বদলাবেন না তিনি।

আগামী ২৮ অগস্ট দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পরীক্ষা রয়েছে। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণাঙ্কুর লেখেন, “এটা কোনও সাধারণ অ্যাকাডেমিক সিদ্ধান্ত নয়। ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দেওয়া এবং দিল্লির ইশারায় চলা এক রাজনৈতিক অপকৌশল।” পরে টিভি৯ বাংলাকে তিনি বলেন, “রাজ্যপাল মনোনীত উপাচার্যরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যা করেছেন বা করেন, উনিও তার ব্যতিক্রম নন। কেন না তাঁদের একটা সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। একটা বড় কর্মসূচি থাকলে আমাদের পরীক্ষা দিতে আসার ক্ষেত্রে সমস্যা তো হবেই। পরিবহণের সমস্যা হয়। কারণ, সেদিন গাড়ি কম থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনও সিদ্ধান্ত মানবিকভাবে নেওয়া উচিত। রাজনৈতিকভাবে নয়। কোনও একজায়গায় মনে হচ্ছে এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য আমার মনে হয়, এদিনের পরীক্ষার তারিখ যদি বদলে নেওয়া হয়, তাহলে ছাত্রছাত্রীরাও নিশ্চিত মনে পরীক্ষা দিতে পারে।”

তৃণাঙ্কুরের মতো উপাচার্যকে আক্রমণ করে টিএমসিপির সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তী বলেন, “সেদিন সারা বাংলা থেকে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী কলকাতায় গান্ধী মূর্তির নিচে এসে উপস্থিত হবে। দুপুর ২টায় পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাথায় রাখা উচিত সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতে পৌঁছতে অসুবিধা না হয়। এসএফআই যখন ধর্মঘট ডাকে, তখন কেন এই উপাচার্য মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন? আসলে তিনি কেন্দ্র ও সিভি আনন্দ বোসের ইশারায় চলছেন। অবিলম্বে পদত্যাগ করে এক হাতে সিপিএমের পতাকা ও অন্য হাতে বিজেপির পতাকা ধরা উচিত।

তবে পরীক্ষার সূচি যে বদলানো হবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। তিনি বলেন, “আজ থেকে প্রায় ৩ মাস আগে বৈঠক করে এই পরীক্ষার দিন স্থির হয়েছে। অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারের ভিত্তিতে পরীক্ষার সূচি হয়। সরকারি ছুটিগুলো বাদ দেওয়া হয়। যদি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা দিবস মানতে হয়, তাহলে যতগুলো রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাদের সবার প্রতিষ্ঠা দিবস মানতে হবে। তাহলে কি পরীক্ষা ব্যবস্থা চালানো সম্ভব?” তারপরই তিনি বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও অনুষ্ঠানের দিনকে গুরুত্ব দিতে আমি রাজি নই। তাই তিনমাস আগে যেভাবে পরীক্ষার দিন ঠিক হয়েছে, সেভাবেই পরীক্ষা হবে।

এই নিয়ে টিএমসিপি-কে কটাক্ষ করে এসএফআই নেতা শুভজিৎ সরকার বলেন, “কালকে যদি তৃণাঙ্কুর বলেন যে আমার জন্মদিন পরীক্ষা রাখা যাবে না। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের কথা মাথায় রেখে কি পরীক্ষার দিন ঠিক হবে? এটা কি ছেলেখেলা? কয়েকদিন আগে দেখলাম একুশে জুলাইকে কেন্দ্র করে স্কুলের পরীক্ষা বন্ধ হয়েছে। আসলে তৃণমূল মনে করছে, সরকার তাদের গণ সংগঠন। যাদের পড়াশোনার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, তারা এসব বলে।