কলকাতা: বাগুইআটি থানা, পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ দলবদলু তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত। নাম না করে রাজারহাট নিউটাউন বিধানসভার বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন তিনি। রবিবার বিধাননগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এক রক্তদান শিবিরে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সব্যসাচী দত্ত। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “আমি পুলিশকে খারাপ বলি না, তারা কী করবে? যদি ভুল না বলি বাগুইআটি থানা অন্তর্গত এখানে বিগত দিনে দুটি বাচ্চার মৃত্যু হয়েছিল। তৎকালীন আইসি অনেক কিছু করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ঘচ্যাং ফুঁ।” পুলিশকে তাবেদার বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। সব্যসাচীর বক্তব্য, “এখন নতুন আইসি এসছেন, ভাবছেন কার কথা শুনবেন। নিশ্চয়ই সরকারি পদে আছেন, তাঁকে ইয়েস স্যর করতেই হবে।”
পুলিশকে সব্যসাচীর পরামর্শ, “আইনের পরিমণ্ডলে থেকে তা পালন করবেন। সবার ঊর্ধ্বে ভারতের সংবিধান, বইটাও সঙ্গে রাখবেন। আপনাদের ওপর আমাদের কোনও বিদ্বেষ নেই, রাগ নেই, কোনও ক্ষোভ নেই। কিন্তু রাতের অন্ধকারে যার সঙ্গে গিয়েই সাক্ষাৎ করুন, রাতে শোয়ার আগে বা ভোরে বা অফিসে বসার আগে ভারতের সংবিধান পড়ে নেবেন। কারণ সংবিধানের ঊর্ধ্বে আপনিও নন, আমিও নই।”
সব্যসাচী দত্ত বনাম তাপস চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক লড়াই বিধাননগর এলাকায় সর্বজনবিদিত। কিন্তু এরই মধ্যে পুলিশকে তাবেদার বলে নাম না করে তাপসকেই কটাক্ষ করেছেন সব্যসাচী, এমনটাই মত রাজনৈতিক অভিজ্ঞদের। সব্যসাচী বলেন, “আমি তো রাজনৈতিক ব্যক্তি, জেলে গেলে টিআরপি বাড়বে, আর আপনি তো সরকারি ঊর্ধ্বিধারী, জেলে গেলে সারা জীবনটাই যাবে। সেই জন্য দয়া করে ওই ভুলটি করবেন না।”
পাশাপাশি দুর্নীতি প্রসঙ্গে বেশ কিছু তথ্য দিয়ে সরব হন সব্যসাচী। তিনি বলেন, ” সাড়ে সাত কোটি টাকা স্টেডিয়ামের নামে তছরূপ রয়েছে। আমার কথা নয় ক্যাভের রিপোর্ট রয়েছে। রাজারহাট গোপালপুর পুরসভায় চাকরি দেব বলে আড়াই হাজার ছেলের ভবিষ্যৎ শেষ করে দিয়েছে। সেই আড়াই হাজার ছেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের পিএফ এর টাকা আপনি জমা দেয়নি। বিধাননগর পৌুরনিগমকে সেই টাকা জমা দিতে হয়েছে।”
সব্যসাচীর এহেন মন্তব্যে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক উত্তাপ চড়তে শুরু করেছে। এলাকার বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “দল থেকে কোনও বিবৃতি দিতে বারণ করেছে। দল আমাকে বারণ করেছে। দলই গোটা বিষয়টি দেখবে। আমি কোনও মন্তব্য করব না।” তবে, সব্যসাচীর এই মন্তব্যে শুধু তাপসের শিবির নয়, তৃণমূলও অস্বস্তি পড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। পুলিশ প্রশাসন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। তাহলে একদা বিদ্রোহী সব্যসাচী নতুন করে তৃণমূল সুপ্রিমোকেই চ্যালেঞ্জ করে বসলেন? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তৃণমূলের অন্দরেই।