
কলকাতা: নতুন করে পরীক্ষায় বসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় তাঁরা হতাশ। তাঁরা চাননি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি হোক। কিন্তু, মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই সাংবাদিক বৈঠক করে চাকরিহারারা বললেন, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রেস বিবৃতি দেখে আমাদের মনে হল সমস্ত যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য একটা মৃত্যু পরোয়ানা ঘোষণা করলেন।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, সুপ্রিম কোর্ট ৩১ মে-র মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বলেছে। সেই নির্দেশ মেনেই চাকরির পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি করা হবে। একইসঙ্গে মমতা বলেন, “রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনও দাখিল করেছে। যদি রিভিউতে বলে যে তোমাদের পরীক্ষা দিতে হবে না তাহলে আমরা সেটাই মানব। তাহলে তোমাদের আর পরীক্ষা দিতে হবে না।” সরকার দুটি পথই খোলা রাখছে জানিয়ে চাকরিহারাদের পরীক্ষায় বসার বার্তা দেন মমতা।
মমতার এই বার্তার পরই আন্দোলনরত যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের তরফে চাকরিহারারা সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে চাকরিহারারা বলেন, “আমরা কখনও চাইনি যে বিজ্ঞপ্তি জারি হোক। মুখ্যমন্ত্রী যে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা বললেন, সেখানে এত ডিটেলস নোটিফিকেশন দেওয়ার কথা বলা হয়নি। আমাদের একটা আশঙ্কা ছিল, সরকার আমাদের পরীক্ষার দিকে নিয়ে যেতে চাইছে। ডিটেলস নোটিফিকেশন দেওয়ায়, সেই আশঙ্কা সত্যি যাচ্ছে। আমাদের মনে হচ্ছে, যোগ্যদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।”
তাঁদের আরও বক্তব্য, “৭ বছর চাকরি করার পর আমাদের প্রতি সরকারের যে দায়বদ্ধতা থাকার কথা ছিল, আজকের বিবৃতিতে তা দেখিনি।” কেন তাঁরা ফের চাকরির পরীক্ষায় বসতে চান না, তারও ব্যাখ্যা দিলেন চাকরিহারারা। তাঁরা এখন ছাত্রছাত্রীদের স্কুলের বই পড়ান। চাকরির পরীক্ষায় যেসব প্রশ্ন আসবে অর্থাৎ স্নাতক, স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা থেকে এতদিন দূরে রয়েছেন। তার উপর চাকরি হারিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। সেখানে ২ মাসের মধ্যে এইসব পড়াশোনা ফের সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, “সাধারণ পরীক্ষা ও চাকরির পরীক্ষার মধ্যে তফাত রয়েছে। নতুন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি আমরা চাইনি। শুধুমাত্র বয়সের ছাড়, এটা ন্যায়বিচার হয়নি।”
একজন চাকরিহারা প্রশ্ন তোলেন, “আমরা যদি পরীক্ষায় বসি এবং কেউ যদি অকৃতকার্য হই, তাহলে তাঁদের নিয়ে কী হবে, তা স্পষ্ট করা হল না।” চাকরিহারারা স্পষ্ট করে দিলেন, “আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা পরীক্ষা দিতে চাই না।” রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ফিরিয়ে আনার সর্বোতভাবে চেষ্টা করতে হবে বলে দাবি জানালেন তাঁরা।