কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির কাঁটার মাঝেই অনুব্রত ইস্যুতে চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল। সেই কেষ্ট ইস্যু এড়াতে পারল না কলকাতা পুরনিগম। মঙ্গলবার ছিল বাজেট অধিবেশন। কলকাতা পুরসভার বাইরের কোনও ইস্যু কোনওভাবেই যাতে বাজেট সংক্রান্ত আলোচনা পর্বে না এসে পড়ে, তার জন্য রীতিমতো সক্রিয় ছিল পুর প্রশাসনের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু সেই যাবতীয় চেষ্টা শেষ দিনে এসে ভেস্তে দিলেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। বাজেট বক্তৃতা পর্বে তিনি বললেন, মণীশ কোঠারির মতো কোনও জালিয়াতকে দিয়ে এই বাজেট তৈরি করেছে তৃণমূল প্রশাসন। সেই বক্তব্য ঘিরেই উত্তাল হয় অধিবেশন।
এদিন সদল ঘোষ বলেন, ‘অনুব্রত মণ্ডল যেমন জালিয়াতকে দিয়ে নিজের অ্যাকাউন্ট অডিট করিয়ে গর্তে পড়ে গিয়েছেন। তেমনই হাল কলকাতা পুরনিগমের। এরপরই চিৎকারে ফেটে পড়েন শাসকদলের কাউন্সিলররা।’ যদিও কলকাতা পুরনিগমের চেয়ারপার্সন মালা রায় সজল ঘোষের এই বক্তব্যকে এক্সপাঞ্জ করেননি। অর্থাৎ এই বক্তব্যকে সরকারি নথিতে আগামী দিন নথিবদ্ধ করা থাকবে বলেই দাবি করেছেন পুরসভার শীর্ষ কর্তারা। এদিন নিজের বক্তব্যে প্রথম থেকেই অর্থনৈতিক সংকট, বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা, জল সরবরাহ নিয়ে অভিযোগ তোলেন সজল ঘোষ।
সূত্রের খবরস এদিন পুরসভায় শাসক দলের তরফে অলিখিত নির্দেশিকা ছিল, সজল ঘোষের বক্তব্যের সময় কোনও কাউন্সিলর যেন চিৎকার চেঁচামেচি না করেন। কোনওভাবেই বিরোধী দলের কাউন্সিলরদের ওয়াক আউট করতে দেওয়া যাবে না। ধৈর্য ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল শাসকদলের কাউন্সিলরদের।
এদিন সর্বশেষ বক্তা হিসাবে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিজেপিকে আক্রমণ করেন। কোভিড পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশে যে মৃতদেহগুলি গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেগুলি তুলে ধরে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘কোনও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে দিয়ে বাজেট তৈরি করা হয় না। বিজেপির প্রতিনিধিরা অশিক্ষিতের মতো কথা বলছেন। তাঁরা জানেন না বাজেট কীভাবে হয় এবং কারা রাত জেগে তৈরি করে। যারা জানে না, আমি বলব ভগবান তাঁদের ক্ষমা করুন।’
এদিন নজিরবিহীন ভাবে বিরোধী বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস কোনওরকম ওয়াকআউটের পথে যায়নি। কিন্তু তিনটি দলের প্রতিনিধিরাই এই বাজেটকে রীতিমতো তুলোধনা করেছেন।