কলকাতা: একটা পার্টিতে গিয়ে প্রথমে মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয় ব্যবসায়ীর। মহিলার সঙ্গে কথাবার্তা হতে থাকে। তারপর পরিচয় হয় তাঁর স্বামীর সঙ্গেও। তিন জনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। এর মধ্যেই ওই দম্পতি ব্যবসায়ীকে একটি প্রস্তাব দেন। ব্যবসায়ী তাতে রাজিও হয়ে যান। আর তাতেই কেল্লাফতে। ব্যবসায় জয়েন্ট ভেঞ্চারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ। অবশেষে পুলিশের জালে সেই দম্পতি।
এই দম্পতিকে দেখে স্তম্ভিত পুলিশও! একেবারেই সাদামাটা চেহারা, পার্সোনালিটিও বিশেষ নয়। তাহলে কোন জাদুবলে তাবড় বুদ্ধিমান, বিত্তমান ব্যবসায়ীকে জালে ফাঁসালেন? কোথায় লুকিয়ে রহস্য?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সল্টলেকের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী বিধান নগর পূর্ব থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, কিছুদিন আগে সল্টলেকের বাসিন্দা রাহুল গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয়। বেশ কিছুদিন কথাবার্তা চলতে চলতে সম্পর্ক একটু গভীর হয়।
ব্যবসায়ীর বক্তব্য, এই দম্পতি তাঁকে একটি ব্যবসায় মিলিতভাবে কাজ করার প্রলোভন দেখান। অভিযোগ, সেই কথার ভিত্তিতে নতুন ব্যবসা শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই ব্যবসায়ীর থেকে দু কোটি টাকা নেন ওই দম্পতি। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও কোনও ব্যবসা শুরু করেন না তাঁরা। দেখা তো দূরের কথা, ধীরে ধীরে ফোন ধরাও বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীর।
প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে বিধান নগর পূর্ব থানায় অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার এই দম্পতিকে গ্রেফতার করে বিধান নগর গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার তাঁদের বিধাননগর আদালতে তোলা হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই দম্পতির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই ব্যবসায়ীর থেকে টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি একটি প্রতারণা চক্র। এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত আছে, তা তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ। পুলিশ মনে করছে, একা এই ব্যবসায়ীর সঙ্গেই নয়, হয়তো আরও অনেককেই এইভাবে ফাঁসিয়েছেন এই দম্পতি। একেবারেই সিদ্ধহস্ত! নাহলে দুকোটি টাকা কীভাবে হাতিয়ে নিতে পারেন পোড় খাওয়া ব্যবসায়ীর থেকে, তাও আবার কথার জালেই!