IPS Supratim Sarkar: ‘হুবহু মিলে গিয়েছিল’! সামসেরগঞ্জে বাবা-ছেলের খুন যে ওই ১৩ জনই করে, কোন বিশেষ পদ্ধতিতে নিশ্চিত হয় পুলিশ, জানালেন সুপ্রতীম সরকার

IPS Supratim Sarkar On Samserganj Case: সুপ্রতীম সরকার জানান, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় একটি নতুন ধারা যোগ করা হয়েছে। সেটি ১০৩(২)। গণপিটুনিতে মৃত্যুতে নতুন ফৌজদারি ধারা। আর এই ধারাতেই মুর্শিদাবাদে বাবা-ছেলে খুনে ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। পুলিশকর্তা জানান, এই কেসে সাজা ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় এটি ভারতবর্ষের মধ্যে 'দ্বিতীয় কনভিকশন'।

IPS Supratim Sarkar: হুবহু মিলে গিয়েছিল! সামসেরগঞ্জে বাবা-ছেলের খুন যে ওই ১৩ জনই করে, কোন বিশেষ পদ্ধতিতে নিশ্চিত হয় পুলিশ, জানালেন সুপ্রতীম সরকার
সামসেরগঞ্জে বাবা-ছেলের খুনের ঘটনাImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Dec 23, 2025 | 6:43 PM

কলকাতা: ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ। জ্বলে উঠেছিল মুর্শিদাবাদ। সামসেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুনের অভিযোগ। ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে জঙ্গিপুর আদালত। কীভাবে ওই ১৩ জনকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছিল, কীভাবে আদালতে ওই ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হল, সেটাই সাংবাদিক বৈঠক করে বললেন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি আইনশৃঙ্খলা সুপ্রতীম সরকার।

সুপ্রতীম সরকার জানান, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় একটি নতুন ধারা যোগ করা হয়েছে। সেটি ১০৩(২)। গণপিটুনিতে মৃত্যুতে নতুন ফৌজদারি ধারা। আর এই ধারাতেই মুর্শিদাবাদে বাবা-ছেলে খুনে ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। পুলিশকর্তা জানান, এই কেসে সাজা ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় এটি ভারতবর্ষের মধ্যে ‘দ্বিতীয় কনভিকশন’।

চলতি বছরে এপ্রিল মাসে ওয়াকফ প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদ ও সংলগ্ন এলাকা তপ্ত হয়ে উঠেছিল। ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদ গ্রামে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল হরগোবিন্দ ও তাঁর ছেলেকে। ঘটনায় নৃশংসতা সারা বাংলা কেঁপে উঠেছিল। বঙ্গ রাজনীতিতে পড়েছিল ব্যাপক শোরগোল। সিআইডি মুর্শিদাবাদ রেঞ্জে  সৈয়দ ওয়াকার রাজার নেতৃত্বে সিট তৈরি করা হয়। তদন্তে জানা যায়, এফআইআর-এ  উল্লেখিত ৫ জন ছাড়াও ১৩ জন ছিল। ১৩ জনের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। রাজ্য এবং বাইরে থেকে রেইড করা হয় এবং ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয় । পুলিশ প্রথম থেকে জানিয়ে এসেছে, রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এই খুন হয়েছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করার ক্ষেত্রে পুলিশ গেট প্যাটার্ন খতিয়ে দেখে। কী এই পদ্ধতি, সেটাও বিস্তারিত জানান পুলিশকর্তা।

সুপ্রতীম সরকার বলেন, “তদন্তে নির্দিষ্ট সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। তা দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। এরপর গেট প‍্যাটার্ন খতিয়ে দেখা হয়।” তিনি জানান,  আমাদের প্রত্যেকের চলার হাঁটার একটা গতি রয়েছে। নির্দিষ্ট ভঙ্গি রয়েছে। একেই গেট প্যাটার্ন বলে। এরপর তদন্তকারীরা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেন। সিসিটিভি ফুটেজে যাদের ঘটনাস্থলের আশপাশে দেখা গিয়েছে, তাদের চলাফেরা, ঘরের মধ্যে ঢোকা, বেরনোর ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। তাদের গেট প্যাটার্ন খতিয়ে দেখা হয়। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন যখন ধৃতদের আদালতে পেশ করা হয়, তখন বিচারকের সামনেও গেট প্যাটার্ন অ‍্যানালিসিস হয়। পুলিশ কর্তা জানান, অভিযুক্তদের সঙ্গে সেই গেট প্যাটার্ন হুবহু মিলে যায়।

৫৬ দিনের মাথায় এই মামলার চার্জশিট জমা করে পুলিশ। ৯৮৩ পাতার চার্জশিটেও  জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ব্যক্তিগত আক্রোশের কথা উল্লেখিত ছিল। ৯ মাসে সাজা ঘোষণা হয় জঙ্গিপুর আদালতে।

এই মামলায় ১৩ জনই স্থানীয় বাসিন্দা। পুলিশকর্তা জানান, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে গত  ১১ এবং ১২ এপ্রিল যে বাকি ঘটনাগুলি ঘটে, তাতে ১০০ টিরও বেশি এফআইআর করা হয়। পুলিশকর্তার কথায়,  যারা বাইরে থেকে এসে গন্ডগোল পাকায়, সেটা নিশ্চিত।