
কলকাতা: ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় জ্বলে উঠেছিল মুর্শিদাবাদ। নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদের হরগোবিন্দ দাশ ও ছেলে চন্দন দাসকে। সেই খুনের মামলায় ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন জঙ্গিপুর আদালত বিচারক অমিতাভ মুখোপাধ্যায়। সাজাপ্রাপ্তরা হল, দিলদার নাদাব, আসমাউল নাদাব, ইনজামামুল হক, জিয়াউল হক, ফেকারুল শেখ, আজফারুল শেখ, মনিরুল শেখ, ইকবাল শেখ, নুরুল শেখ, সাবা করিম, হাজরত শেখ, আকবর আলি, ইউসুফ শেখ। পাশাপাশি এই মামলায় নিহত বাবা-ছেলের পরিবারকে ১৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। চলতি বছরের ১২ এপ্রিলের ঘটনা। বাবা-ছেলেকে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছিল।
সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১০ বছরের অতিরিক্ত কারাদণ্ড ডাকাতি, লুঠপাটের জন্য। ভারতে গণপিটুনিতে মৃত্যুর একাধিক কেস রয়েছে। তার মধ্যে এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম। আমরা আমাদের বক্তব্যকে বিভিন্ন জাজমেন্ট দিয়ে আদালতে প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমরা অখুশি এমনটা নই। আমাদের কাছে দুটো অপশন খোলা ছিল। একটি যাবজ্জীবন অন্যটা মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ডেথ সেনটেন্স দিতে বারণ করছে। সেই পরামর্শ তো সবসময়ই বিচারক, বিচারপতিদের মাথায় থাকে।”
আইনজীবীর কথায়, “যারা দোষী, তাদের প্রত্যেকেরই বয়স কম। বাড়িতে চার পাঁচ জন রয়েছে। বাচ্চা রয়েছে। হয়তো এগুলোকে কনসিডারেশন হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। আমি ভিক্টিম ও আর এই ঘটনার প্রভাব যে সমাজেও রয়েছে, সেটা বিস্তারিত আদালতে বোঝাই।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে এপ্রিল মাসে ওয়াকফ প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদ ও সংলগ্ন এলাকা তপ্ত হয়ে উঠেছিল। ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদ গ্রামে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল হরগোবিন্দ ও তাঁর ছেলেকে। ঘটনায় নৃশংসতা সারা বাংলা কেঁপে উঠেছিল। বঙ্গ রাজনীতিতে পড়েছিল ব্যাপক শোরগোল। পুলিশ প্রথম থেকে জানিয়ে এসেছে, রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এই খুন হয়েছে। ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ৯৮৩ পাতার চার্জশিট জমা দেয় সিট। ২২ ডিসেম্বর জঙ্গিপুর আদালত ১৩ জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে।