AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘সনাতন ম্যাজিক,’ এক চেয়ারে বসে কখনও রাজভবন, কখনও নিজাম প্যালেস!

Sanatan Roy Chowdhury: উপদেষ্টা-আধিকারিক-আইনজীবী-রাজনীতিবিদ-লেখক! এক সনাতনের অনন্ত রূপ।

'সনাতন ম্যাজিক,' এক চেয়ারে বসে কখনও রাজভবন, কখনও নিজাম প্যালেস!
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ
| Edited By: | Updated on: Jul 07, 2021 | 6:10 PM
Share

কলকাতা: ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবকে নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়, তখন সামনে এসেছে আর এক ভুয়ো অফিসার সনাতন রায় চৌধুরী (Sanatan Roy Chowdhury)। এতদিন যাঁরা দেবাঞ্জনের কীর্তি দেখে চোখ কপালে তুলেছেন সনাতনকে দেখে তাঁরা তুলনা টেনে দেখছেন, কে বড় খিলাড়ি! এ হেন সনাতন সোশ্যাল মিডিয়ায় কেমন মানুষ?

সনাতন রায় চৌধুরীর নিজস্ব একটি ফেসবুক প্রোফাইল আছে। সেখানে ঢুঁ দিলে সনাতন আসলে কে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়তে পারেন যে কেউ। ফেসবুক ওয়াল যেন তাঁর জীবনের খোলা ডায়েরি। সেখানে নিয়ম করে নিজের ছবি পোস্ট না করলে যেন দিনটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায় সনাতনের।

মজার ব্যাপার, সনাতনের বেশিরভাগ ছবির স্থান একই, একটি অফিস ঘর। কিন্তু সনাতনের কাছে সেটাই কখনও নিজাম প্যালেস, কখনও সিজিও কমপ্লেক্স, কখনও বা রাজভবন। অনেক সময় সেটাই আবার তাঁর উত্তর কলকাতার সিঁথির অফিস থেকে দক্ষিনের বালিগঞ্জের নতুন ঠিকানা। একই ঘরের বিভিন্ন জায়গায় শুধু চেয়ার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাতেই বদলে যায় সনাতনের ঠিকানা।

sanatan

এটাই সিজিও কমপ্লেক্স, এটাই নিজাম প্যালেস আবার এটাই ঘর!

শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের দ্বারা সনাতন আবার দার্শনিকও বটে। কোথাও তিনি লিখেছেন, জালিয়াত থেকে সাবধান, কোনও পোস্টে আবার প্রতিবাদী সনাতন গর্জে উঠে বলছেন, যেখানেই অন্যায় চুপ করে না থেকে প্রতিবাদ করুন।

সোশ্যাল মিডিয়া পেজে নিজেকে স্পেশাল কাউন্সিল অফ গর্ভনমেন্ট অফ ইন্ডিয়া বলে পরিচয় দিয়েছেন সনাতন। আদতে সেটাও ভুয়ো বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। আবার কোথাও ‘ডক্টর’ সনাতন রায় চৌধুরী লেখকও বটে। নিজের প্রকাশিত ‘চিন্তা, মনন ও আইন’ নামে বইয়ের প্রচারও করছেন।

একই সনাতনের সঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপির যোগ রয়েছে বলে মনে হতে পারে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে। রাজ্য সরকার সিবিআই-র কৌঁসুলি বলে পরিচয় দিতেন তিনি। এমনকি সত্যিই ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে দমদম কেন্দ্র থেকে লোক জনশক্তি পার্টির প্রার্থীও হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী দফতরের উপদেষ্টা হিসাবে পরিচয় দিয়ে প্রথম পুলিশের সন্দেহের চোখে পড়া সনাতনের কীর্তি ফাঁস হয় গত ৩০ জুন।

ভুয়ো পরিচয় দিয়ে গড়িয়াহাটের একটি ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছিলেন সনাতন। তার পর তিনি গ্রেফতার হন। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় সনাতন যেন মাটির মানুষ, আদ্যোপান্ত ফ্যামেলি ম্যান। কখনও নিজের বোন অসুস্থ বলে রক্ত চেয়ে পোস্ট করেছেন। কখনও সেই বোনের মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে শোকবিহ্বল দেখিয়েছে তাঁকে। অর্থাৎ, রোজকার জীবনে ঘটে চলা সহজ সরল সমস্ত ঘটনাই সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরতেন সনাতন। কিন্তু ‘আসল’ সনাতন যে কে তা কেবল তদন্ত সাপেক্ষ।

সাম্প্রতিক জেরায় তদন্তকারীদের সনাতন দাবি করেছেন, তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি হয়ে ব্রিকস (BRICS) সম্মেলনে গিয়েছিলেন। যে সম্মেলনে হাজির ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী!

আরও পড়ুন: কলকাতার বুকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সনাতন! কোন দলের প্রতীকে? 

তদন্তকারীরা একটা কথা অবশ্য বলছেন, সনাতনের হাত অনেক দূর। সনাতন-কাণ্ডের নেপথ্যে থাকতে পারে বিশিষ্ট ও প্রভাবশালীরাও। তবে তাঁরা কারা, তাও তদন্তে উঠে আসবে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।