কলকাতা: গুরুতর অসুস্থ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। গ্রিন করিডর করে তাঁকে নিয়ে আসা হল হাসপাতালে। লেকগার্ডেন্সের বাড়ি থেকে তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর রুমে রাখা হয়েছে তাঁকে। চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ডুর তত্ত্বাবধানে গীতশ্রী চিকিৎসাধীন। বর্ষীয়ান শিল্পীর ইকো হবে। রক্তপরীক্ষা এবং কোভিড টেস্ট করা হয়। এ সকল রিপোর্ট আসার পরে আরও কী কী পরীক্ষা প্রয়োজন, তা দেখা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। কিন্তু বুধবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বৃহস্পতিবার সকালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ নেয় পরিবার। বিষয়টি জানানো হয় ওয়ার্ড কাউন্সিল মৌসুমী দাসকেও। এরপরই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বুধবার রাত থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে শিল্পীর। বুধবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ফোন করে শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ একাই বাথরুমে যান শিল্পী। তখন তিনি বাথরুমে পড়ে যান। তাঁর পায়ে চোট লাগে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে আরও। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। তখনই ফ্য়ামিলি ফিজিশিয়ান এসে তাঁকে দেখেন। সকালে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। পরিবারের সদস্যরা অবশ্য এর থেকে বেশি কিছু বলতে চাননি। শুধু জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেই সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকও রয়েছেন।
জানা যাচ্ছে, শিল্পীর জ্ঞান রয়েছে। তবে তাঁর শরীরের তাপমাত্রা বেশি। মনে করা হচ্ছে নিউমোনিয়া ও ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত তিনি।
পুলিশের তরফে হাসপাতালের সামনে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়। মেডিসিন বিভাগের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা পৌঁছন উডবার্ন ওয়ার্ডে এসেছেন। হাসপাতালের সামনের রাস্তা ফাঁকা করে দেওয়া হয়। রেফারেল হিসাবে অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক মুকুল ভট্টাচার্যকে ডাকা হয়।
৯২ বছরের সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় পদ্ম সম্মান প্রত্যাখ্যান করে একেবারে জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন। তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দিতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। শিল্পী তাতে অপমানিত বোধ করেন। ফোনেই জানিয়ে দেন, তিনি সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করছেন।
গীতশ্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের একাংশ দাবি করছেন, গত কয়েকদিনে এই পর্ব শিল্পীর মনে চাপ তৈরি করেছিল। তারই মধ্যে তাঁর গুরুতর অসুস্থতার খবর। উদ্বিগ্ন গোটা বাংলা।