School Service Commission: সরিয়ে দেওয়া হোক SSC চেয়ারম্যানকে, রাজ্যকে পরামর্শ হাইকোর্টের
Kolkata: স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের ভূমিকায় কার্যত অসন্তুষ্ট আদালতের প্রশ্ন কেন মোবাইলে এসএমএস করেই বা কী করে দায় সারল কমিশন? কেন স্পিড পোস্টের মাধ্যমে কাউন্সিলিংয়ে ডাকা হল না?
কলকাতা: মামলার পর মামলা। বিক্ষোভের পর বিক্ষোভ। অনিয়মের পর অনিয়মের অভিযোগ। বছরের পর বছর থমকে নিয়োগ। বারবার আদালতের প্রশ্নচিহ্নর মুখেও পড়তে হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। অবশেষে, কার্যত চূড়ান্ত পদক্ষেপ করতে উদ্য়োগী হল কলকাতা হাইকোর্ট। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে পদ থেকে সরানোর বিষয়ে বিবেচনা করতে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। একইসঙ্গে নিয়োগে ত্রুটি ও অযোগ্যতার অভিযোগে চেয়ারম্যানকে নিজের পকেট থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মামলাকারীকে চেক মারফত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিতর্কের সূত্রপাত
সোমবার আদালতে, শিক্ষা দফতরের স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে সরানো যায় কি না, রাজ্যকে তা খতিয়ে দেখার প্রস্তাব দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৬ সালে নবম ও দশম শ্রেণির নিয়োগের জন্য এসএলএসটি পরীক্ষা হয়েছিল। সুমনা লায়েক নামে এক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ওই বছরের নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষায় তাঁর নাম মেধাতালিকার অনেক পিছনে থাকায় তাঁকে নেওয়া হয়নি। পরে সুমনা খবর পান, যে মেধাতালিকায় নীচে থাকা পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি সুযোগ পাননি। এ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সুমনা।
সেই মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে হলফনামা দিয়ে এসএসসির চেয়ারম্যান জানান,ওই চাকরিপ্রার্থীকে নির্দিষ্ট দিনে কাউন্সেলিংয়ের জন্য মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু ওইদিন তিনি হাজির হননি। ফলে তাঁর পরে যাঁরা এসছিলেন তাঁরা কাউন্সিলিংয়ে যোগ দিয়ে যোগ্যতা অনুযায়ী মনোনীত হন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের ভূমিকায় কার্যত অসন্তুষ্ট আদালতের প্রশ্ন কেন মোবাইলে এসএমএস করেই বা কী করে দায় সারল কমিশন? কেন স্পিড পোস্টের মাধ্যমে কাউন্সিলিংয়ে ডাকা হল না?
এখানেই শেষ নয়, চেয়ারম্যান প্রদত্ত হলফনামায় মামলাকারীর মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠানোর কথা উল্লেখ থাকলেও কোন মোবাইল থেকে মামলাকারীর নম্বরে এসএমএস পাঠানো হয়েছে তার উল্লেখ করা হয়নি। ফলে আদৌ যে এসএমএস পাঠানো হয়েছে তার কোনও স্পষ্ট প্রমাণ কমিশনের কাছে নেই।
স্কুল সার্ভিস কমিশন চেয়ারম্যানের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
এরপরেই চেয়ারম্যানের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এত অনিয়মের অভিযোগ কেন! ইনি কোন ধরনের চেয়ারম্যান। কোন যোগ্যতামানের চেয়ারম্যান কাজ করছেন সেন্ট্রাল সার্ভিস কমিশনে!”
তারপর চেয়ারম্যানকে সরানো হবে কি না তা নিয়ে রাজ্যকে বিবেচনা করার পরামর্শ দেন বিচারপতি। পাশাপাশি এও উল্লেখ করেন, এই ধরনের ঘটনায় কেবল হাইকোর্টকে অপমান করা হয় এমনটা নয়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেওয়া হয়। তাই রাজ্য শিক্ষা দফতর হাইকোর্টের এই নির্দেশ খতিয়ে দেখবে বলেই মনে করছেন বিচারপতি। এখানেই না থেমে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও নির্দেশ, হাই কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল চারদিনের মধ্যে এই অর্ডার রাজ্যের মুখ্যসচিব ও শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবের কাছে পাঠাবেন।