Shankar Adhya: ‘মধ্যরাতে ব্যাগ থেকে একটা কাগজ বার করে দেখান অফিসার, আমি তো অবাক’, শঙ্করের স্ত্রীকে কোন গোপন তথ্য দেখিয়ে ফেলেন ED অফিসার?
Shankar Adhya: শঙ্কর আঢ্যর স্ত্রীর দাবি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে অন্য সকলের মতো শঙ্করেরও যোগাযোগ ছিল। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে রাজনীতির সূত্রেই যোগাযোগ। জেলার উন্নয়ন নিয়েই শঙ্করের কথা হত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। রেশন দুর্নীতির সঙ্গে শঙ্করের কোনও যোগাযোগ নেই।
কলকাতা: রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের শেষে মধ্যরাতে গ্রেফতার করা হয় বনগাঁর তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যকে। তারপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতার স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য। তিনি প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন, পরিকল্পনা করেই তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সকাল হতেই সিজিও কমপ্লেক্সে এসে হাজির হলেন শঙ্কর আঢ্যের স্ত্রী ও মেয়ে। তখনও আধিকারিকরা অফিসে এসে পৌঁছননি। বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের অপেক্ষা করতে হয়। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে শঙ্কর আঢ্যর স্ত্রী দাবি করেন, ইডির এক অফিসার গ্রেফতারের আগে শঙ্করবাবুকে বলেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নাকি তাঁর নাম নিয়েছেন। তাঁর স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি জ্যোৎস্না আঢ্যর।
জ্যোৎস্না আঢ্যের বয়ান অনুযায়ী, শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করার ঠিক ১৩ মিনিট আগে তাঁকে একটি কাগজ দেখিয়েছিলেন এক ইডি আধিকারিক। সেখানে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম ছিল। সেই কাগজে আর ঠিক কী ছিল? কী বলছেন শঙ্কর আঢ্যর স্ত্রী? ইডি দফতরের বাইরে গাড়িতে বসে সকালে তাঁর স্ত্রী বলেন, “সারাদিন অফিসাররা ব্যবসা নিয়েই কথা বলল। ১২.১৫ সময়ে এক ইডি অফিসার ব্যাগের থেকে কাগজ বার করে দেখালেন, বললেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক রেশন বণ্টনের সঙ্গে আপনার স্বামীকে অ্যাটাচ করা হচ্ছে। তখন তো আমরা অবাক।”
প্রশ্ন উঠছে, ঠিক কী কাগজ দেখিয়েছিলেন ইডি আধিকারিক, যেখানে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম ছিল। রাত ১২.১৫ মিনিটে ওই কাগজ দেখানোর মিনিট পনেরো পরই শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করেন ইডি আধিকারিকরা। আর তারপরই বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে শঙ্কর অনুগামীদের ইডি-র গাড়িতে হামলা। তাহলে প্রশ্ন, ওই কাগজ কি তবে কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি, যা দেখে ‘অবাক’ হয়ে গিয়েছিলেন শঙ্করের স্ত্রী।
স্ত্রীর দাবি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে অন্য সকলের মতো শঙ্করেরও যোগাযোগ ছিল। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে রাজনীতির সূত্রেই যোগাযোগ। জেলার উন্নয়ন নিয়েই শঙ্করের কথা হত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। রেশন দুর্নীতির সঙ্গে শঙ্করের কোনও যোগাযোগ নেই।
অন্যদিকে, শঙ্কর কন্যা বলেন, “অবশ্যই চক্রান্ত, রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। কোনও লেনদেন নেই বাবার সঙ্গে। আইনের কাছে আবেদন যেন সঠিকভাবে বিচার হয়।” তবে এর পিছনে ঘোরতর চক্রান্ত রয়েছে বলেই দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “কে চক্রান্ত করেছে বলতে পারছি না, তদন্ত যত এগোবে জবাব দিয়ে দেব।” তবে এটাও তিনি বলেছেন, ” টাকা যেটা উদ্ধার হয়েছে, সেটা একজন সাধারণ মানুষের বাড়িতে থাকতেই পারে।” উল্লেখ্য, শঙ্কর আঢ্য বাড়ি থেকে সাড়ে আট লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছেন আধিকারিকরা। সেই টাকার উৎসই খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
ইডি জানতে পেরেছেন, শঙ্কর ওরফে ডাকুর একাধিক সংস্থা রয়েছে। ইডি-র অভিযোগ, শঙ্কর এবং তাঁর পরিবার একাধিক বিদেশি মুদ্রা বিনিময় ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। রয়েছে অর্থলগ্নি সংস্থাও। ইডি নজরে সেই সংস্থা গুলির আর্থিক লেনদেন। এই আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে রেশন বা শিক্ষা দুর্নীতির যোগ আছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।