কলকাতা: বঙ্গ বিজেপির অন্দরে ইদানিং হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ‘লেফট’ করার একটা ব্যাপক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পান থেকে চুন খসলেই নেতারা ভার্চুয়াল গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। শনিবার পাঁচ বিধায়ক হোয়াটস অ্যাপের একটি গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান বলে সূত্রের দাবি। রাজ্য কমিটিতে মতুয়াদের যথেষ্ট জায়গা না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত বলে সূত্রের খবর। শুধু তাই নয়, শোনা যাচ্ছে শীলভদ্র দত্ত, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিজেপির মিডিয়া গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন।
কারা এই পাঁচ বিধায়ক? নাম নিয়ে দলের তরফে এখনও কোনও সিলমোহর না পড়লেও যা শোনা যাচ্ছে তালিকায় রয়েছেন অশোক কীর্তনিয়া, মুকুটমণি অধিকারী, সুব্রত ঠাকুর, অসীম সরকার এবং অম্বিকা রায়। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সদ্য গঠিন বিজেপির রাজ্য কমিটিতে সে অর্থে মতুয়া-প্রতিনিধির জায়গা হয়নি। এ নিয়েই ক্ষোভ বাড়ছিল এই সম্প্রদায়ের বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। এরপরই পাঁচজন বিধায়ক বিজেপি বিধায়কদের যে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তা ছেড়ে বেরিয়ে যান বলে সূত্রের খবর।
শুধু তাই নয়, এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন সাংসদ-প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। যা খবর, রাজ্য কমিটি নিয়ে খুশি নন তিনিও। সূত্রের দাবি, এ বিষয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাৎও করতে চলেছেন তিনি। সর্বভারতীয় সভাপতির কাছ থেকে নাকি এ জন্য সময়ও চেয়েছেন বনগাঁর সাংসদ।
শনিবার বিজেপির বিভিন্ন জেলার সভাপতি ও পর্যবেক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যথেষ্ট পরিমাণে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, এই অভিযোগ তুলে বিজেপির পাঁচজন বিধায়ক বিধানসভার যে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ আছে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে, সেখান থেকে বেরিয়ে যান বলে জানা যাচ্ছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, ‘বেসুরো’ বিধায়করা বড় কোনও সিদ্ধান্তও নিতে পারেন।
এমনও শোনা যাচ্ছে, নতুন রাজ্য কমিটি, জেলা কমিটি নিয়ে একেবারেই খুশি নন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও। জেপি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছেন তিনি। এমনও হতে পারে বড়দিনের রাতেই দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে তাঁর।
কিছুদিন আগেই বিজেপির রাজ্য কমিটি ঘোষণা হয়। সেই কমিটির কোথাও রাখা হয়নি সায়ন্তন বসুকে। বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নতুন রাজ্য কমিটির তালিকা ঢোকা মাত্রই সায়ন্তন বসু সেই গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান। বিজেপি সূত্রে তেমনটাই খবর। যদিও এ বিষয়ে সায়ন্তন বসুর সাফ বক্তব্য, “এটাই তো স্বাভাবিক। রাজ্য কমিটিতে না থাকলে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকাটা তো নৈতিক নয়। তাই ওই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছি।”
কিন্তু বিষয়টা যে এতটাও সহজ নয়, তা ধীরে ধীরে পল্লবিত হয়। সায়ন্তন পরে জানান, তিনি আরএসএস করা নেতা। সেটাই করতে চান। অর্থাৎ বঙ্গ বিজেপি থেকে তাঁর মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। শনিবার সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতিদের তালিকায় প্রকাশ হতেই ফের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল বলেই সূত্রের দাবি। যদিও পাঁচ বিধায়কের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছাড়া কিংবা শীলভদ্র দত্ত, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ লেফট করা নিয়ে এখনও কোনও বক্তব্য আসেনি তাঁদের তরফে।
আরও পড়ুন: BJP District President: এবার উত্তর কলকাতার বিজেপি সামলাবেন কল্যাণ চৌবে, বদল অধিকাংশ জেলা সভাপতিই