কলকাতা: তিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন। গেরুয়া শিবির ছেড়েও দিয়েছেন। কিন্তু, এখনও শাসকদলের হয়ে রাজনীতির ময়দানে নামতে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে ভাইফোঁটায় এবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে দেখা গেল কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। সঙ্গে ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দু’জনকে রং মিলিয়ে পোশাক পরতে দেখা যায়। রবিবারও তাঁর অন্যথা হয়নি। গোলাপি পাঞ্জাবিতে অন্য মেজাজে দেখা গেল শোভনকে। মমতার বাড়ি থেকে ফোঁটা নিয়ে বেরনোর সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন। আরজি কর কাণ্ড থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়েও মুখ খুললেন।
মমতার কালীঘাটের বাড়ি থেকে ফোঁটা নিয়ে বেরিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দিদির আশীর্বাদটাই আমার কাছে বড় বিষয়। এই আশীর্বাদকে পাথেয় করেই পথচলা। এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করি।” সক্রিয় রাজনীতিতে ফের কবে তাঁকে দেখা যাবে? প্রশ্ন শুনে মুচকি হেসে শোভন বলেন, “যেদিন সক্রিয় হব, সেদিন সাংবাদিকদের বুমের সামনে জানাব।”
আরজি কর কাণ্ডের পর বিরোধীদের নিশানায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। আবার গত কয়েকদিনে রাজ্যের একাধিক প্রান্তে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে শোভন বলেন, “মানসিক বিকৃতিতে কিছু মানুষ এগুলো ঘটাচ্ছে। সেটাকে প্রতিহত করতে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোনও দ্বিধাবোধ করেনি। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” আরজি কর কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত নিয়ে কিছু বলতে চাইলেন না কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। তিনি বলেন, “সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে আমি তো কিছু বলতে পারব না। তবে কলকাতা পুলিশ যে পদক্ষেপ করেছিল, তার বাইরে কিছু করেনি।”
মমতার কাছ থেকে শোভনের ভাইফোঁটা নেওয়া নিয়ে বৈশাখী বলেন, “অনেকেই বলেন যে দূরত্ব নাকি মানুষের আবেগকে কমিয়ে দেয়। কিন্তু, শোভন ও দিদির যে সুন্দর সম্পর্ক, এটা যখন দেখি তখন মনে হয় দূরত্ব কখনই তা করতে পারে না।” সক্রিয় রাজনীতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দ্রুত ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, “শোভনের রাজনৈতিক কেরিয়ার দিদির হাতে তৈরি। দিদির যখন মনে হবে, সাধারণ মানুষের জন্য ওঁকে সক্রিয় করা দরকার, তখন ওঁকে সক্রিয় করবেন। তবে আর বোধহয় বেশিদিনের অপেক্ষা নয়।”
আরজি কর কাণ্ড এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে বৈশাখী বলেন, “বিষয়টি খুব দুঃখজনক। এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশেই বাড়ছে। মহিলাদের জব্দ করার অস্ত্র হয়ে উঠছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। বরং দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ যা করছে, তার বাইরে কিছু করতে পারেনি সিবিআই। এবার সকলের ভাবা দরকার, কথায় কথায় সিবিআই তদন্ত চাওয়া দরকার কি না।”