Toto Fare: ভাড়া বাড়ছে টোটোর?

Toto Fare: শহর হোক বা মফঃস্বল, এমনকি গ্রামে-গঞ্জেও বিগত কয়েক বছরে টোটোর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। বাঁকুড়া হোক বা বর্ধমান সর্বত্রই একই ছবি। বাঁকুড়ার মতো মফস্বল জেলা সদরেও বাড়তে বাড়তে বর্তমানে টোটোর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার।

Toto Fare: ভাড়া বাড়ছে টোটোর?
কী বলছেন টোটো চালকরা? Image Credit source: TV 9 Bangla

| Edited By: জয়দীপ দাস

Oct 16, 2025 | 7:03 PM

কলকাতা: উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা, দুই বাড়ছে সমানতালে। কিন্তু সরকার বলছে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে করতে রেজিস্ট্রেশন। দিতে হবে হাজার টাকা। অন্যদিকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলছন করবেন না, বিধানসভা ভোটের আগে কেউ রেজিস্ট্রেশন করবেন না। কেন টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে মাসে মাসে ১০০ টাকা করে দেওয়া নিয়েও। যদিও পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন না করলেই বাতিল হবে টোটো। তা নিয়ে চর্চা-তরজার এবার উদ্বেগ বাড়ছে টোটোর ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে।  

শহর হোক বা মফঃস্বল, এমনকি গ্রামে-গঞ্জেও বিগত কয়েক বছরে টোটোর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। বাঁকুড়া হোক বা বর্ধমান সর্বত্রই একই ছবি। বাঁকুড়ার মতো মফস্বল জেলা সদরেও বাড়তে বাড়তে বর্তমানে টোটোর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার। সূত্রের খবর, বর্ধমানে তো শহরের বাইরে থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ হাজার টোটো শহরে প্রবেশ করে। শহরে তো ৫ হাজারেরও বেশি, দৈনিক গড়ে প্রায় ১০ হাজারের বেশি টোটো গোটা শহরে চলাচল করে। কয়েক বছর আগে সরকারিভাবে শহরের টোটোর সংখ্যা ছিল চার হাজার তিনশো। আর সেটাই এখন হাজার পার। কিন্তু টোটো সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে তার সঙ্গে কী পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যাত্রীদের সংখ্যা? প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। এরইমধ্যে বছরে ১২০০ টাকা করে কী করে গুণবেন তা বুঝে পাচ্ছেন না টোটো চালকরা। অনেকেই বলছেন ভাড়া না বাড়ালে কোনও উপায় নেই। 

কী বলছেন চালকরা? 

বর্ধমানের টোটো চালকদের সিংহভাগই বলছেন, যাত্রীরাই তো আমাদের কাছে সব। এখন নতুুন করে টাকা দিতে হলে ভাড়া বৃদ্ধি করা ছাড়া আমাদের কাছে কোনও উপায় নেই। দীর্ঘদিন থেকেই শহরে টোটো চালাচ্ছেন সবিতা পরামানিক। উদ্বেগের সঙ্গেই তিনি বলছেন, “এরকম চলতে থাকলে ভাড়া অবশ্যই বাড়াতে হবে। একই ভাড়াতে আমাদের পোষাবে না। আমরা যখন এই পেশায় নেমেছিলাম তখন এত টোটো তো ছিল না। তখন এই ভাড়া ঠিক ছিল। এখন অনেক টোটো বেড়ে গিয়েছে। এখনও আরও অতিরিক্ত খরচ বাড়া মানে আমাদের জন্য অনেকটাই চাপের। এমনই এখন টোটো চালিয়ে সংসার চালানো খুবই চাপের হয়ে যাচ্ছে।” একই সুর অন্যান্য চালকদের গলাতেও। 

কী বলছেন যাত্রীরা? 

উদ্বেগ বাড়ছে যাত্রীদের মধ্যেও। কেউ কেউ এই সিদ্ধান্তে একদিকে যেমন টোটো চালকদের উপর চাপ বেড়ে যাবে, তেমনই সেই চাপ ঘুরপথে এসে পড়বে যাত্রীদের উপরেও। এক যাত্রী যেমন বলছেন, ভাড়া এমনিই বেশি। এখন যদি আরও বাড়ে তাহলে আরও চাপ বেড়ে যাবে। আরও এক যাত্রী বলছেন, টোটো চালকদের উপর চাপ বাড়লে তখন তো সেটা আমাদের উপরেও এসে পড়বে। 

শুধু গ্রাম বা মফঃস্বল নয়, বিগত কয়েক বছরে টোটোর দৌরাত্ম্য বেড়েছে শহরাঞ্চলগুলিতেও। কেউ কেউ বলছেন সেখানে এমনিতেই টোটোর ভাড়া ঊর্ধ্বমুখী। এই যেমন অফিস পাড়া সেক্টর ফাইভে অল্প দূরত্বের সেক্টর ফাইভ মেট্রোতে যেতে ভাড়া ৫০ টাকা। বাসে সেখানে মাত্র ১০। 

তবে টোটোর সংখ্যাবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি না হাওয়াতেও উদ্বেগ রয়েছে টোটো চালকদের মধ্যে। বর্ধমান শহরের অন্দরে ও বাইরে থেকে আসা টোটো মিলিয়ে টোটোর সংখ্যা ১০ হাজারের থেকেও অনেকটাই বেশি। শুধু বর্ধমানেই কয়েক বছর আগে সরকারিভাবে শহরের টোটোর সংখ্যা ছিল চার হাজার তিনশো। সে সময় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রেজিস্ট্রেশনও হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল বাইরের টোটো শহরে প্রবেশ করবে না। আলাদা আলাদা করে টোটোর নীল ও সবুজ রঙ করা হয়েছিল। রোটেশন পদ্ধতিতে রাতে সবুজ আর দিনে নীল টোটো চলবে বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যাতেই অবস্থা যাকে তাই। টোটো চালকরাই বলছেন বর্তমানে কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই। আর সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা। মানে উঠলেই ১০। এখন নতুন করে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে রাজনীতি, চর্চা, তরজা সবই চলছে। পক্ষে-বিপক্ষে উঠে আসছে নানা মত। কিন্তু নভেম্বরের শেষে জল কোনদিকে গড়ায় সেটাই দেখার।