কলকাতা: স্কুল শিক্ষক নিয়োগ মামলায় এবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবী। মঙ্গলবার বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসি মামলার শুনানি ছিল। সেখানে বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবী বিচারপতির কাছেই প্রশ্ন করেন, “আপনি থাকলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো নির্দেশ দিতেন?”
এদিনের সওয়াল জবাবের শুরুতে CBI-এর গাজিয়াবাদ অভিযান নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিতর্কিত চাকরি প্রাপকরা। বিতর্কিত চাকরি প্রাপকদের আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্রের প্রশ্ন, “কেন গাজিয়াবাদ গেল CBI ? কিসের ভিত্তিতে CBI এর গাজিয়াবাদ অভিযান ? NYSA র দফতরে না গিয়ে প্রাক্তন আধিকারিক পঙ্কজ বনসলের বাড়িতেই কেন গেল CBI ?”
CBI-এর রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা কী? তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবী। তখনই তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কেন বেতন ফেরতের মতো কড়া নির্দেশ দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ? আপনি হলে কি এই ধরনের নির্দেশ দিতেন ?” প্রশ্ন করতেই জোর দিয়ে বিচারপতি দেবাংশু বসাক বলেন, “আমি হয়তো হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিতাম।” পাল্টা বিচারপতি আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, “কেউ অবৈধভাবে চাকরি পেলে কী করা উচিৎ? আমরা ২৩ লক্ষ OMR আমরা খতিয়ে দেখিনি।”
এসএসসি-র তরফ থেকে জানানো হয়, “আদালতের নির্দেশে CBI যে OMR গুলি আমাদের দিয়েছিল, সেগুলি আমরা খতিয়ে দেখেছি।” বিচারপতি বসাক প্রশ্ন করেন, ”
আদালত যদি ২৩ লক্ষ OMR পুনরায় খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় তাহলে পারবেন?”
এসএসসি-র তরফ থেকে তখন জানানো হয়, “সময়সাপেক্ষ কিন্তু সম্ভব।”
এরপর আবারও বিতর্কিত চাকরি প্রাপকদের আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র প্রশ্ন তোলেন, ” CBI আধিকারিকরা কেন গাজিয়াবাদে গেলেন সেটা স্পষ্ট করে বলছেন না। তাঁরা NYSA নামক সংস্থার অফিসে না গিয়ে কেন এক প্রাক্তন আধিকারিকের বাড়িতে গেলেন সেটাও বলছেন না। CBI এর এই ধরনের রিপোর্টের আদৌ কোন বিশ্বাসযোগ্যতা আছে ?”
তাঁর আরও প্রশ্ন, “স্কুল সার্ভিস কমিশন NYSA র তথ্যে বিশ্বাস করছে। কিন্তু তাঁরা কি বলেছে যে সেখানকার প্রাক্তন আধিকারিক পঙ্কজ বনসলের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া হার্ড ডিস্কের তথ্যের ওপর বিশ্বাস রাখছেন ?”
সে প্রসঙ্গে আরও একবার বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবী প্রশ্ন করেন, “যাঁরা চার পাঁচ বছর কাজ করেছেন তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আপনি থাকলে কি এই নির্দেশ দিতেন ?” বিচারপতি দেবাংশু বসাক দৃশ্যত জোর দিয়ে উত্তর দেন, “আমরা হয়তো আরও একটা লাইন যোগ করতে পারতাম, যে তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।”
বিচারপতির প্রশ্ন, “যদি কেউ অবৈধ ভাবে চাকরি পায় তার সঙ্গে কী করা উচিত ?” উত্তরে আইনজীবী বলেন, “যদি ধরেও নেওয়া যায় যে কোন যোগ্য ব্যক্তি অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছেন কিন্তু নিষ্ঠার সঙ্গে যোগ্যতার সঙ্গে চাকরি করেছেন তাহলে কি তাঁর বেতন ফেরত দেওয়ার কথা বলা যায় ?”