কলকাতা : ৯৫২ জনের ওএমআর শিট প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। এসএসসি-র ওয়েবসাইটে সেই উত্তরপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু রোল নম্বর ও জন্ম তারিখ না দিলে সেই ওএমআর শিট দেখা যাচ্ছে না। সেই বিষয়টি দেখে এসএসসি-র স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি-র নবম-দশমের যে সব চাকরি প্রার্থীদের ওএমআর শিট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, সেই ৯৫২ জনের উত্তরপত্র প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছিল কমিশনের ওয়েবসাইটে। আদালতের নির্দেশ মেনেই সেই প্রার্থীদের ওএমআর শিট প্রকাশ করা হলেও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতি।
আদালতের নির্দেশে এদিন আদালতে হাজির হন কমিশনের সেক্রেটারি অর্ণব চট্টোপাধ্যায়। বিচারপতি তাঁকে প্রশ্ন করেন, কেন রোল নম্বর এবং জন্ম তারিখ না দিলে ওএমআর দেখা যাচ্ছে না? কেন এই আড়াল? কেন স্বচ্ছতা নেই? এটা দেখে আদালত খুশি নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। কমিশনের সচিব জানান, কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এমনটা হচ্ছে। বিচারপতির নির্দেশ, যাতে সবাই দেখতে পান, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইট বর্তমানে যেন সাদা ওএমআর শিটের সার্ভারে রূপান্তরিত হয়েছে। যে ওয়েবসাইটে চাকরি প্রাপ্তদের নাম থাকত, সেখানে এখন প্রকাশ করা হচ্ছে দুর্নীতির ‘নমুনা’। হাইকোর্টের নির্দেশে একের পর এক ‘অযোগ্য’ প্রার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ করা হচ্ছে। যার মধ্যে বেশ কয়েকটি উত্তরপত্রে দেখা যাচ্ছে নাম, রোল নম্বর ছাড়া কোনও দাগই নেই। বৃহস্পতিবার নতুন করে এসএসসি গ্রুপ ডি-র ১০০ টি ওএমআর প্রকাশ করতে চলেছে এসএসসি।
প্রথম দফায় এসএসসি-র নবম দশমের নিয়োগে বেআইনিভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত ১৮৩ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিল এসএসসি। এরপর আরও ৪০ জনের নাম ও তাঁদের ওএমআর শিট প্রকাশ করা হয়। বুধবার রাতে আরও ৯৫২ জনের উত্তরপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেও সাদা খাতার ছড়াছড়ি। বৃহস্পতিবারই প্রকাশ করা হবে আরও ১০০ টি ওএমআর শিট। ইতিমধ্যেই তার মধ্যে একটি উত্তরপত্র এসেছে TV9 বাংলার হাতে, যাতে দেখা যাচ্ছে নাম, রোল নম্বর ছাড়া একটি আঁচড়ও কাটা হয়নি। অথচ সিবিআই জানতে পেরেছে, এই প্রার্থীদের নম্বর পরবর্তীতে এসএসসি-র খাতায় বেড়ে হয়ে গিয়েছে ৪২ বা ৪৩।
বুধবার রাতে যে ৯৫২ জনের উত্তরপত্র প্রকাশ করা হয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগ প্রার্থীই বর্তমানে চাকরিরত বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ বেআইনিভাবে নিযুক্ত সেই সব শিক্ষক শিক্ষিকারা এখনও কোনও না কোনও স্কুলে পড়াচ্ছেন।