কলকাতা: হাইকোর্টের তিরস্কারের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিব। এসএসসি গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ ঘিরে কমিশনকে চরম ভর্তসনা হাইকোর্টের। নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে হাইকোর্টের তিরস্কারের মুখে সচিব। নিয়োগে বেনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগের জবাব তলব করা হল। বেলা ২টো পর্যন্ত কমিশনকে সময় দিল আদালত। বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের কঠোর পর্যবেক্ষণ, কমিশনের সব অফিসারকে বরখাস্ত করে দেব। তার মধ্যে জবাব না কমিশনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসএসসি-র বিভিন্ন পদক্ষেপে এর আগেও হাইকোর্টের ভর্তসনার মুখে পড়ে কমিশন। বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় এর আগেও সরব হয়েছেন। মঙ্গলবার গ্রুপ ডি তে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় কমিশনের কাছে সুপারিশ নথি-সহ বেশ কিছু তথ্য চাওয়া হয়। বুধবার সকাল ১০ টার সময়ে তা নিয়ে আদালতে হাজিরা থাকার কথা ছিল কমিশনের সচিবের। কিন্তু এদিন শুনানির সময়ে কমিশনের পক্ষ থেকে আইনজীবী সময় চান। কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়, কাউকেই আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে না। কিন্তু নথি একত্রিত করতে সময় লাগবে কিছুটা। বিচারপতি তাতে আরও বিরক্ত হন। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সময় দেওয়া হলে, তদন্তের নামে অন্য কিছু হবে।
বিচারপতি এদিন স্পষ্ট বলেন, এসএসসি-র ওপর আদালতের কোনও ভরসা নেই। প্রয়োজনে সিবিআইকে তদন্ত করতে বলা হবে, এমনও বলেন বিচারপতি। সিআইএসএফ-কে এসএসসি-র অফিসের দখল নিতেও তিনি বলতে পারেন বলে এদিন আদালতে আগাম হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি। এসএসসি দফতরে কম্পিউটারে একাধিক নথি, ফাইল রয়েছে, সেগুলি নষ্ট করে দেওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিনই দুপুর ৩টের মধ্যে নিয়োগের নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেলা ৩টেয় ফের হাইকোর্টে মামলার শুনানি। প্রসঙ্গত, স্কুল সার্ভিস কমিশন প্যানেল বহির্ভূত নিয়োগের সুপারিশ করেছে। ২৫ জনের নিয়োগের ক্ষেত্রে এই অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবারই শুনানির সময়ে সুপারিশ নথি সহ বুধবার সকাল ১০ টায় হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয় কমিশন সচিবকে। কিন্তু কমিশনের জবাবে এদিন সন্তুষ্ট হয় না আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই মতো ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে সেই গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। তারপরেও একাধিক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশের কথা জানা গিয়েছে। সেই তথ্য হাইকোর্টের হাতে আসে। কী ভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ নিয়োগ তালিকা থেকে নিয়োগ তারই কৈফিয়ত চায় হাইকোর্ট।
এক নজরে আদালতের আজকের পর্যবেক্ষণ
♦ কমিশনকে সময় দেওয়া হলে, তদন্তের নামে অন্য কিছু হবে।
♦ এসএসসি-র ওপর আদালতের কোনও ভরসা নেই।
♦ গ্রুপ ডি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে প্রয়োজনে সিবিআইকে তদন্ত করতে বলা হবে।
♦ সিআইএসএফ-কে এসএসসি-র অফিসের দখল নিতেও বলা হতে পারে।
♦ এসএসসি দফতরে কম্পিউটারে একাধিক নথি, ফাইল রয়েছে, সেগুলি নষ্ট করে দেওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বিজেপি অর্থকেন্দ্রিক দল’, ‘জাগো বাংলা’য় চাঁচাছোলা লেখনী প্রবীর ঘোষালের
আরও পড়ুন: কাঁকুরগাছির অভিজিত্ ‘খুনে’ এবার মামলা হতে পারে পুলিশ কর্তা ও বিধায়কের নামে